এ রেকর্ড কেবলই সৌম্যর

শেষ বেলায় যেন তীব্র গড়মের তেজের সঙ্গে জ্বলে উঠলেন সৌম্য। দানবীয় ইনিংসের সঙ্গে গড়েছেন রেকর্ড। জিতিয়েছেন দলকে। এর সঙ্গে আবারো চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। এর পুরো কৃতিত্বটাই দেয়া যায় আজকের ইনিংস বয় সৌম্যকে।

শুরুতে রান পাননি, বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া নিয়েও নির্বাচকদের ভাবতে হয়েছে অনেক। মেষবেলা এসে পুরো লিগের রান খরা যেন সুদে আসলে আজ উসুল করে নিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে (লিস্ট ‘এ’ ও আন্তর্জাতিক ওডিআই মিলে), এই প্রথম কোনো ডাবল সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখালেন ডিপিএল এর কোনো ব্যাটসম্যান। আর তিনি সৌম্য সরকার।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ৩১৭ রানের বিশাল পাহাড় টপকাতে ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে ইমতিয়াজ হোসেন তান্নাকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লিস্ট ‘এ’ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করেন সৌম্য সরকার।

১৪৯ বলে ১৪টি বাউন্ডারি এবং ১৫টি ছক্কা মেরে ঐতিহাসিক এই মাইলফলকে পৌঁছান বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান।

গত খেলায়ই শতরান পূরনের পর আজ আবারো ক্রিকেট দেখলো সৌম্য তাণ্ডব। পুরো লিগে তার ব্যাটে রান নেই। রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত প্রথম পর্ব আর সুপার লিগ মিলে ১১ ম্যাচে মোটে ১৯৭ রান করেন তিনি।

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সেই শতরানে চোখ-মুখে স্বস্তির পরশ। সেই ভালোলাগা নিয়ে বললেন, ‘অনেকদিন পর রানে ফিরে এবং সেঞ্চুরি করে ভাল লাগছে। তবে শতরানের পর ইনিংসটি বড় হয়নি, শেষ করে আসতে পারিনি- তাই কিছুটা আফসোস থেকেই গেছে। এ রকম অবস্থায় আসলে ইনিংসটাকে বড় করা উচিৎ।’

আজ বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শেখ জামালের বিপক্ষে প্রিমিয়ার সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ছক্কার বৃষ্টিতে বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি আরও এক অনন্য কীর্তি গড়লেন সৌম্য সরকার।

বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দূর্লভ কৃতিত্বের অধিকারি হলেন তিনি।

শেখ জামালের ৩১৭ রানের বিশাল পাহাড় টপকাতে নেমে জহুরুল ইসলাম অমিকে নিয়ে ৩১২ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়েন সৌম্য। ১২৮ বলে ১০০ রান করে জুহুরুল ইসলাম অমি আউট হয়ে গেলেও সৌম্য থাকেন অপরাজিত। এমনকি ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে তাইজুলকে ছক্কা মেরে আবাহনীর জয় নিশ্চিত করেন।

শুরুতে ধিরলয়ে খেললেও ৫২ বলে পূরণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। যেখানে  ছিল ৪ বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছয়। এরপর সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৭৮ বলে। ৮টি বাউন্ডারি আর ৮টি ছয়ে।

এরপর ১৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছান ১০৪ বলে। ৮ বাউন্ডারির সঙ্গে ১৫টি ছয়। ছক্কা বৃষ্টিতে রীতিমত রেকর্ড গড়েন সৌম্য। তৃতীয় ৫০ পূরণ করতেও তিনি খেলেন ২৬ বল। এরপর ৪৫ বলে পৌঁছান চতুর্থ ফিফটিতে। শেষ পর্যন্ত ১৪৯ বলে ২০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ১৪ বাউন্ডারি এবং ১৫ ছক্কায়।

ম্যাচ শেষে ১৬ ছয়ে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওয়ানডে কিংবা লিস্ট এ ক্রিকেটে যে কোনো ব্যাটসম্যানের হয়ে সর্বোচ্চ ছয় মারার রেকর্ড এটি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)