বিকেএসপিতে সৌম্যর ব্যাটে ঝড়ো সেঞ্চুরি

দিনের দ্বিতীয় ওভারে, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদকে লং অনের পাশ দিয়ে সোজা ব্যাটে চার হাঁকানোর মধ্য দিয়ে শুরু। আর পঞ্চাশের আশ-পাশে থাকতে ভারতীয় মিডিয়াম পেসার ঋশি ধাওয়ানের বলে পুল করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। খেলতে চেয়েছিলেন স্কয়ার লেগে, ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে মিস হিট হয়ে লং লেগের উপর দিয়ে সীমানার ওপারে আছড়ে পড়ে ছক্কা।

এছাড়া যে বল যেখানে খেলতে চেয়েছেন, সেখানেই অনায়াসে খেলেছেন। একেবারে চান্সলেস ইনিংস। নিখুঁত-মসৃণ বলতে যা বোঝায়, তেমনই ব্যাট করে গেলেন। ৩৯ বলে এবারের প্রিমিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার পর ইনিংসটাকে সৌম্য নিয়ে গেলেন তিন অংকের ঘরেও।

৭১তম বলে সেই বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদকে, দিনের ২৩ নম্বর ওভারের প্রথম বলে কব্জি মোচড়ে শর্ট ফাইন লেগে ঘুরিয়ে সিঙ্গেলস নিয়েই শতরান পূর্ণ করেন সৌম্য সরকার। বলাই বাহূল্য, এবারের মৌসুমে এটা সৌম্যর প্রথম সেঞ্চুরি। ১৪টি চার এবং যটি ছক্কায় সাজালেন এই ইনিংস।

প্রসঙ্গতঃ গত বছর জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের বিপক্ষে এই বিকেএসপির মাঠেই পরপর দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা আন্তর্জাতিক- অনেকদিন রান খরায় ভুগলেন। এরপর সেই বিকেএপসিতেই নিজেকের ফিরে পেলেন তিনি।

০, ১৭, ২, ১, ১৪, ১০, ১২, ২৯, ৪৩, ৩৬ = গত ১০ ইনিংসে সৌম্য সরকারের রান এগুলো। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস হচ্ছে ৪৩ রানের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে ৪৩ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছিলেন সৌম্য। তার আগে ৩৬ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন প্রাইম ব্যাংকের হয়ে।

এরপর ধারাবাহিকভাবেই সৌম্য সরকারের পারফরম্যান্স ছিল তলানীর দিকে। ব্যাট হাতে রানই পাচ্ছিলেন না তিনি। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে তাকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ছিলেন নির্বাচকরা। তাকে দলে রাখবেন কি রাখবেন না- সে সিদ্ধান্ত নিতেই গলদঘর্ম হগে হয়েছে নির্বাচকদের।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় হয়তো জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে গেছেন সৌম্য; কিন্তু তার পারফরম্যান্স রেখে দেয়া হয়েছে আতশি কাঁচের নিচে। আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজের আগ পর্যন্ত তার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও হতে পারে।

বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর তো রীতিমত ‘ডাক’ মেরে দিয়েছিলেন সৌম্য। মিরপুরে ১৯ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে।

এভাবে একের পর এক বাজে পারফরম্যান্সের কারণে যখন প্রশ্নের মুখে সৌম্য, তখন ব্যাট হাতে জবাবটা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করলেন তিনি। এ জন্য বেছে নিলেন বিকেএসপিকেই। প্রিমিয়ারের শীর্ষে থাকা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মুখোমুখি হয়ে বিকেএসপিতে আজ অসাধারণ এক হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেললেন তিনি।

রূপগঞ্জের বোলারদের ওপর শুরু থেকেই মারমুখি ছিলেন তিনি। যে কারণে এবারের প্রিমিয়াার লিগে সৌম্য সরকার প্রথম হাফ সেঞ্চুরিটা করলেন মাত্র ৩৯ বল থেলে। ৮টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কা মেরে। হাফ সেঞ্চুরিটা এমন এক সময়ে মারলেন, যখন তার খেলা মাঠের বাইরে বসে সরাসরি দেখছিলেন প্রধান কোচ স্টিভ রোডস এবং প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)