সমাজ ও জনসেবামূলক মহৎ পেশা সাংবাদিকতা !
সাংবাদিকতা হল সমাজ ও জনসেবামূলক গুরুত্বপূর্ণ একটি পেশা। এ পেশার সঙ্গে মহৎ শব্দটি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। এ পেশার প্রতিটি ব্যক্তির প্রধান কাজ হল সমাজে ঘটে যাওয়া সমস্যা, অন্যায়, অনিয়ম-দুর্নীতি জনসম্মুখে তুলে ধরা। পাশাপাশি ভালোর প্রশংসা করা, যা দেখে সবাই সচেতন হবে কিংবা উদ্বুদ্ধ হবে। প্রভাবিত হয়ে নয়, প্রকৃত সত্যটাকে তুলে ধরা হলো একজন সাংবাদিকের প্রথম এবং প্রধান কাজ।
সংবাদপত্র যেমন সমাজের দর্পণ, তেমনি এই দর্পণের রক্ষাকারী হলো সাংবাদিক। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় হল, ইতিহাস- ঐতিহ্যের এই মহান পেশায় সুনাম যেন দিন দিন ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, আতঙ্কে পরিণত হচ্ছে সাংবাদিক নামক পেশা। সমাজ ও জাতিকে ন্যায় পথ দেখানোর দায়িত্ব হলো কলম সৈনিকের। কিন্তু বর্তমানে প্রায়ই যেন এর ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হচ্ছে । এই পেশাগত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে কমার্শিয়াল দায়িত্ববোধ মনে করছে সহজে ঢুকে পড়া কথিত হাইব্রিড সংবাদকর্মীরা। তারা লোভের বশবর্তী হয়ে নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা করছে না, সমাজের সাধারণ লোকজন যাদের ঘৃণার চোখে দেখছে।
এদের নেই কোন বিবেকবোধ, আত্মসম্মানবোধ, নৈতিকতা। এরাই আজ এ মহৎ পেশার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে। এদের কাছে নৈতিকতার বালাই নাই । এরা সামান্য অর্থের বিনিময়ে নিজেকে বিক্রি করে দিচ্ছে, নিজের অস্তিত্বকে ধ্বংস করছে।
এরা কোন মানের সংবাদকর্মী নয়।এরা কাউকে সম্মান করতে জানেনা। এরা নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে ।সিনিয়র ও বিজ্ঞজনদের উপেক্ষা করতেও এদের বিবেকে বাধে না। এদের দ্বারাই সুশৃঙ্খলটার পরিবর্তে সমাজে বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হয়, যা সমাজ ধ্বংসের অশনিসংকেত।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, সমাজে এদের সংখ্যা বেশি না হলেও, আজ যেন এদেরই জয়জয়কার। অসুস্থ মানসিকতার গুটিকয়েক প্রভাবশালীর আশ্রয়- প্রশ্রয়ে এই অপসাংবাদিকতা ও সিন্ডিকেট সাংবাদিকতার দৌরাত্ম্য প্রতিনিয়ত যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত এদের কারণে সজ্জনরা হচ্ছেন উপেক্ষিত ও অপদস্থ। এর মূলোৎপাটনে সবাইকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড হলুদ সাংবাদিকদের রুখতে হবে। যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এরা লালিত, তাদের বিরুদ্ধেও কলম ধরতে হবে এ পেশার অস্তিত্ব ও সম্মান টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। কলঙ্কযুক্ত করতে হবে ঐতিহ্যের ধারক এ মহান পেশাকে। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে প্রত্যেকের। অপসাংবাদিকতার খোলস থেকে বেরিয়ে আত্মগঠনে নিয়োজিত হতে হবে সবাইকে। কলমি শক্তির মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। কাউকে কটাক্ষ করা বা উপেক্ষা করার পরিবর্তে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। সমাজ ও জাতিকে ভালো কিছু দিতে হবে লেখনীর মাধ্যমে। সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য পরিণত করার হীন মানসিকতা দূর করতে হবে অন্তর থেকে। লোভ লালসা থেকে বেরিয়ে এসে সত্য জয়ের মানসিকতায় এগিয়ে যেতে হবে। তবেই এ পেশার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে,সম্মানিত হবে মহান পেশায় নিয়জিত কর্মীরা প্রতিটি স্তরে।
…..লে খ কঃ- সুজন ঘোষ