বিএনপিকে ভারতের ৫ প্রস্তাব

নব নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বিএনপি এবং ভারতীয় দূতাবাসের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে, রিভা বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলেন। যাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রত্যেককেই ৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছে রিভা গাঙ্গুলি। এই প্রস্তাব ভারতের পক্ষ থেকেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপিকে যে প্রস্তাবগুলো বাংলাদেশে ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে:

১. বিএনপিকে অবিলম্বে শপথ নিয়ে সংসদ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা। তাদের কন্ঠস্বর যত কমই হোক না কেন, সংসদকেই সরকারের সমলোচনার মূল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা।

২. বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে বিএনপিকে সত্যিকার একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে উন্মুক্ত করা।

৩. জামাতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া।  স্বাধীনতা বিরোধী, মৌলবাদী সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে যেন বিএনপি কোন সম্পর্ক না রাখে তার নিশ্চয়তা প্রধান করা।

৪. বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে বিএনপির কার্যক্রম থেকে অবসরে পাঠানো এবং বিএনপির সকল ধরণের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া।

৫. আপাতত আন্দোলন-সংগ্রাম না করে বিএনপি যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ড এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে সেটার ব্যাপারে জনগনের স্বার্থ এবং জনগনের ইস্যুতে আন্দোলন এবং কর্মসূচী যেন গ্রহণ করে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু ছাড়া অধিকাংশ নেতৃবৃন্দই এই প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু মিন্টু তাদেরকে বলেছেন, তারেক জিয়া বিএনপিতে অসম্ভব জনপ্রিয়। তাকে বাদ দিয়ে বিএনপিতে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হলে সে ব্যাপারে বিএনপির সিংহভাগ জনগোষ্ঠী আপত্তি করবে। তারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও জানায়, আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছে যে, উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া কোন নেতৃত্ব বিএনপির তৃনমূল মেনে নিবে না। এরকম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল ওয়ান ইলেভেনের সময়। যা ওয়ান ইলেভেনে ব্যার্থ হয়েছে।

সূত্রমতে, বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু ভারত যদি বাংলাদেশে একদল কেন্দ্রীক সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তখন বিএনপিকে ভারত বিরোধী অবস্থান নিতেই হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত কি বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, ভারত সবগুলো রাজনৈতিক দলকে সংসদে আনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শেষ পর্যন্ত ভারত এবং মার্কিন চাপে হয়তো বিএনপিকে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতেই পারে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)