দেশে সিগারেট সস্তা, মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব
সিগারেটের ওপর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কর আরোপ করা হয় বেশি। তারপরও উন্নত দেশ তো বটেই, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশে সিগারেটের দাম কম। সিগারেটে বাস্তবে চলছে ‘কর বেশি, দাম সস্তা’—এই প্যারাডক্স বা আপাত স্ববিরোধ। কারণও আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখন পর্যন্ত সিগারেট তথা তামাকপণ্যে কার্যকর কোনো করকাঠামো তৈরি করতে পারেনি।
তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা গতকাল রোববার ঢাকার বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় এসব কথা তুলে ধরেছে। কর্মশালায় প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়ক হাসান শাহরিয়ার ‘২০১৯-২০ অর্থবছরে তামাক পণ্যে কর’ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঢাকা কার্যালয়ের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার সৈয়দ মাহফুজুল হক ‘তামাকপণ্যে করারোপে নৈতিক, আইনগত ও অর্থনৈতিক যুক্তি’ শীর্ষক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচকেরা ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর বর্তমানের চারটি থেকে কমিয়ে দুটিতে নামিয়ে আনার পরামর্শ দেন। তাঁরা বলেন, বিদ্যমান তামাক করকাঠামো অত্যন্ত জটিল এবং তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে যথেষ্ট নয়। সিগারেটসহ সব তামাকপণ্যে কর বাড়াতে হবে। এতে ভোগ কমবে।
হাসান শাহরিয়ারের প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশে ব্র্যান্ডের সিগারেটের ওপর কর ধরা হয় ৭৭ শতাংশ। প্রায় একই মানের সিগারেটে এ কর থাইল্যান্ডে ৭৩, শ্রীলঙ্কায় ৬২, ইন্দোনেশিয়ায় ৫৭, ভারতে ৪৩, মিয়ানমারে ৩৫ এবং নেপালে ২৬ শতাংশ। কিন্তু আশ্চর্যজনক যে সিগারেটের দাম মিয়ানমার ছাড়া বাংলাদেশের চেয়ে সবারই বেশি। বাংলাদেশে এক প্যাকেট সিগারেটের দাম ৩ দশমিক ৩৯ ডলার, যা শ্রীলঙ্কায় ১৯ দশমিক ৫৮ ডলার, ভারতে ৯ দশমিক ১৭ ডলার, থাইল্যান্ডে ৭ দশমিক শূন্য ৮ ডলার, নেপালে ৫ দশমিক ৭৩ ডলার এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ২৩ ডলার। অর্থাৎ যে দামের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে কর আরোপ করা হয়, সে দামটাই কম।
সিগারেট কোম্পানিগুলো ৩২ শতাংশ মুনাফা করে—এ তথ্য উল্লেখসহ মাহফুজুল হকের প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের ১৫ বছরের বেশি জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাকের ভোক্তা।