ব্যালট উদ্ধারের অভিযোগ ভিত্তিহীন: রোকেয়া হলের প্রভোস্ট

রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনের দিন সকালে রোকেয়া হলের ভেতরে একটি কক্ষে তিন ট্রাঙ্ক ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিস কনসেপশন (ভুল ধারণা)। আমরা সেদিন গণমাধ্যমকর্মী ও প্রার্থীদের ব্যালট বাক্স দেখিয়েই নির্বাচন শুরু করেছিলাম। তাই এটা নিয়ে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে রোকেয়া হল সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ব্যালটভর্তি বলে আলোচিত ট্রাঙ্ক তিনটিও সেখানে হাজির করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সোমবার (১১ মার্চ)। সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি হলে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ছাত্রীদের কুয়েত মৈত্রী হল ও রোকেয়া হলে ভোটগ্রহণ শুরু করা যায়নি। পরে কুয়েত মৈত্রী হল থেকে বেশকিছু আগের রাতে সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করে ছাত্রীরা। সেখানকার প্রভোস্টকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর সেখানে ভোট শুরু হয়।

রোকেয়া হলে ছাত্রীদের সামনে ছয়টি ব্যালট বাক্স খুলে দেখানো হয়। ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের হলে মোট নয়টি ব্যাক্স থাকার কথা। এখানে প্রায় এক ঘণ্টা পরে ভোট শুরু হয়। কিন্তু দুপুরের দিকে ছাত্রীরা দাবি করেন, বাকি ব্যালট পেপার সিলগালা করে হলের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে শরগোল তৈরি হয়। একপর্যায়ে সেখানে ছাত্রলীগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ স্বাতন্ত্র প্রার্থীরা যান। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হলের সেই কক্ষ থেকে তিনটি ট্রাঙ্কে ভরা ব্যালট পেপার বের করা হয় এবং তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

হলটিতে পুনর্নির্বাচন ও প্রভোস্টের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে বুধবার (১৩ মার্চ) রাত থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন রোকেয়া হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী। অনশনে বসা চারজন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন পদের প্রার্থী ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ১১ মার্চ নির্বাচনের দিন রোকেয়া হলে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন হাউজ টিউটর দিল আরা জাহান। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা।

তিনটি ব্যালট পেপারের বাক্স ভোটকেন্দ্রের বাইরে পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যালট পেপারের বাক্সগুলো ভোটকেন্দ্রের বাইরে ছিলো না। বাক্সগুলো যেখানে পাওয়া গিয়েছিল (অডিটোরিয়ামে), সেটাও ভোটকেন্দ্রের অংশ। ভেতরের ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা সেগুলো ব্যবহারের জন্য সেখানে রেখেছিলাম।

ভোটগ্রহণ চলাকালে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে সোমবার রাতেই শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মারজুকা রায়না মামলাটি করেন।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে ড. জিনাত হুদা বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। আমি প্রভোস্ট হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করিনি। আমি মামলার কথা জেনেছি গণমাধ্যম থেকে। কোনো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়নি। আমি অনশনকারীদের জানিয়েছি যে, বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার এখতিয়ার কোনো প্রাধ্যক্ষের নেই।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)