সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালন

ছবিতে ছবিতে বাংলাদেশ। রং তুলির আঁচড়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশ। কণ্ঠে কবি আল মাহমুদের, একুশের কবিতা। আর হস্তলেখায় ভেসে উঠলো আমার ‘সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’।

কচি কাঁচা শিশু কিশোররা এভাবেই তুলে ধরলো বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা আর বাঙ্গালিকে। শ্রদ্ধা জানালো একুশের ভাষা শহিদদের। তাদের চোখে মুখে উদ্দীপ্যমান উচ্ছ্বাস। রং তুলি পেন্সিলের আগায় মাতৃভূমি বাংলাদেশ যেন নতুন রূপে নতুন রংয়ে ধরা দিয়েছিলো। বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিলনায়তন শিশু কিশোরদের পদচারনায় এভাবেই মুখরিত হয়ে উঠেছিল। হাতে তাদের রং পেনসিল, ক্যানভাস। তাদের হাতে মাতৃভূমি বাংলাদেশ। হৃদয়ে কণ্ঠে মায়ের ভাষা বাংলা।
মহান একুশের প্রহরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব ডাক দিয়েছিল কোমলমতি শিশু কিশলয়কে। তারা শহিদ মিনার তৈরি করেছে। অংকন করেছে তারা কেমন দেখেছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালন। রবীন্দ্র নাথের কালজয়ী গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ নিজ হাতে লিখেছে। কবি আল মাহমুদের কবিতা ‘একুশের কবিতা’ ‘ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ, দুপুর বেলার অক্ত, বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়, বরকতের রক্ত’ আবৃত্তি করে ১৯৫২ এর শহিদ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যদের সন্তানরা এসব প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে।
সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন জাতির ভবিষ্যৎ এই শিশুদের আমাদের শেকড়ের কথা জানাতে হবে। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শেখাতে হবে। বাঙ্গালি জাতির উত্থান, বাঙ্গালি জাতির উন্মেষ তাদের শিখাতে হবে। শিশুদের মন ও মননে গেঁথে দিতে হবে বাংলা বাঙ্গালি ও বাংলা ভাষা । তাদেরকে শিক্ষা দিতে হবে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল তাদের দেশ প্রেমের কথা।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানমালার প্রথমার্ধে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহি, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপ্পী প্রমুখ সাংবাদিক।

বিকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ আলাউদ্দিন মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎ মিশ। এ সময় তিনি বিজয়ী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে বলেন শিশুদের প্রতিযোগী হয়ে উঠতে হবে। তাদেরকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। মায়ের ভাষা বাংলা ভাষায় তাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের শিক্ষা নিতে হবে। বিকালের এ অধিবেশেনে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। প্রেসক্লাব সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপীর সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল ওয়াজেদ কচি, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, সেলিম রেজা মুকুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ, আরটিভির রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, একাত্তর টিভির বরুণ ব্যানার্জি, সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক আবদুল জলিল, নির্বাহী সদস্য গোলাম সরোয়ার প্রমুখ সাংবাদিক।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপে প্রথম টিআর জারিফ, দ্বিতীয় আনিসা মাহমুদ, তৃতীয় সাকওয়াল উল ইসলাম রিহান। খ গ্রুপে প্রথম জারিন তাসনিম খান, দ্বিতীয় লাবীবা ইসরাত লাবণ্য, তৃতীয় তানিসা ইসলাম তিশা। সুন্দর হাতের লেখায় প্রথম সুদীপা সরকার, দ্বিতীয় তাজিমা আফরিন, তৃতীয় মনিরা পারভিন মেঘা। এ ছাড়া আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রথম অদ্রি, দ্বিতীয় মোশারাত রহমান নিতিন, তৃতীয় মাফান্না পারভিন দিঘী। এ ছাড়া আরও পুরস্কার লাভ করে রোহিত চক্রবর্তী, শামিয়া আফরিন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)