কালিগঞ্জে অযোগ্য আলামিনের দপ্তরী পদে নিয়োগ : এখন করছে দায়িত্ব অবহেলা

সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৭৬ নং সন্ন্যাসীরচক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী মোঃ আলামিন গাজীর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা,ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে জানা যায়, সন্ন্যাসীর চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী আলামিন গাজী ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ের এই পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৫ম স্থান অধিকার করে।

বাকী প্রথম ,দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী প্রার্থীদের না নিয়োগ দিয়েই মোটা অংকের টাকা ও স্থানীয় ধনীর প্রভাব দেখিয়ে, প্রথম ও দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান অধিকারী প্রার্থীদের রাষ্ট্রীয়দ্রহীতা মামলা ও গুম করার ভয় দেখিয়ে চাকুরীতে যোগদান করতে না দিয়েই দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে চাকরিতে যোগদান করে।

তারপর থেকে সে তার অর্পিত দায়িত্ব দপ্তরের কোন কাজ করে না, নৈশ্যপ্রহরী হওয়ার স্বার্থেও সে রাতে থাকে না। বিদ্যালয়ের পরিষ্কার পরিছন্নতার কাজ না করে শিক্ষার্থীদের দিয়েই করানো । এছাড়া সরকার ঘোষিত কোন জাতীয় দিবস যেমন ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস,১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস,ও ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের কোন কাজে বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকদের কাজে সহযোগিতা করেন না।

এ নিয়ে কর্মরত শিক্ষকগন বহুবার তাকে মৌলিকভাবে বললেও সে কোন কর্ণপাত না করে বরং শিক্ষকগনে সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকি প্রদান করে এবং বলতে থাকে আমার বাবা কি গরীব মানুষ তাই আমি এমনই কাজ করবো ?

এদিকে গত ১৫ জানুয়ারি সরকার ঘোষিত আন্তঃ সরকারি প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় স্কুল পর্যায়ে খেলা পরিচালনা করা কালে প্রধান সহ অন্যান্য শিক্ষকগনে উপস্থিতিতে দপ্তরী আলামীনের মোরগ লড়াই সহ অন্যান্য খেলার সরণজ্জোম নিয়ে আসতে বললে তিনি শিক্ষকদের উপর ক্ষেপে গিয়ে শিক্ষকদের অকর্তভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন জীবননাশের হুমকি প্রদান করেন।

তখনই প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকগন ও এসএমসি কমিটির সভাপতি বিষয়টি উপরস্থ কর্মকর্তাদের অবহিত করার জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, এবং ওই দিন প্রধান শিক্ষক শিবানী রানী স্বর্ণকার কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আঃ হাকিম এর কাছে লিখিত আকারে দপ্তরী আলামীনের বিরুদ্ধে জানায়।

শিক্ষা অফিসার দপ্তরী ত্রাস আলামিনের অসামাজিক কর্মাকান্ডের তদন্তের ভার উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শেখ মিয়ারাজুল আসরেফিন ও সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর এর ওপর অর্পণ করেন । তারপর তারা ২১ জানুয়ারি সরেজমিনে তদন্তে আসেন এবং উপস্থিত এসএমসির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য, শিক্ষক গন সহ এলাকার সূধীজনদের কাছ থেকেই দপ্তরী আলামিন সম্পর্কে মৌলিক ও লিখিত নিয়ে আসেন। এবং তার বিরুদ্ধেই সকল অভিযোগে সম্পূর্ণ সত্যতা পান বলেই শিক্ষা অফিসারগন আগামী সপ্তাহের মধ্যে দপ্তরী আলামীনের সাময়িক বরখাস্ত সহ বেতন বন্দ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে।

কিন্তু আজও আলামিনের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আলামিন আজও তার কর্মরত বিদ্যালয়ে ধরাকে সরাগান করে কাজ আসছে বলে জানা যায়।

এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবানী রানী স্বর্ণকারের সাথে আলাপ কালে তিনি আলামিনের ব্যাপারে সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন শুনেছি শিক্ষকমন্ডলী সহ অনন্যারাও আলামিনের নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।

এছাড়াও মুঠো ফোনে আলাপ কালে জানাযায়, উক্ত বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সভাপতি আলহাজ্জ্ব মুছাকরিম,সহসভাপতি, অন্যান্য সদস্য গন সহ ওয়াড আওয়ামী লীগের নেত্রীবৃন্দরা এর সত্যতা স্বীকার করেন।

এদিকে তদন্তে কর্মকর্তাদের সাথে মোবাইলে আলাপ কালে তারা আলামিনের দুর্নীতি ও অসৎ আচরণের কথা অকপটে স্বীকার করেন এবং বলেন আমাদের অফিসের ব্যস্ততার কারণে রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে । আমরা খুব শীঘ্র রিপোর্ট দিয়ে দেবো।

দপ্তরী আলামীনের সাথে আলাপ কালে তার দোষ স্বীকার করে বলেন, আমি আমার অপকর্মের কথা স্বীকার করে নিয়ে মুসলেকা দিয়ে সব কিছু মিটাইয়া নিয়েছি।

এদিকে ভুক্তভোগীরা ,আলামীনের কোন ব্যবস্থা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এবং সেই সাথে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দপ্তরী আলামীনের বরখাস্ত সহ দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)