খাশোগিকে হত্যায় সৌদির বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ

বর্বর ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। আন্তর্জাতিক তদন্তে অংশ নেয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে বর্বর ও পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনায় সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি, আল জাজিরা।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যাগনেস ক্লামারড বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তুরস্কের তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ভয়ঙ্কর অডিও রেকর্ডটি তার তিন সদস্যের দলটি খতিয়ে দেখেছে।

প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তুরস্কের তদন্ত করার উদ্যোগে সৌদি সব রকমভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে।

সৌদি সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। তখন সৌদি এই ঘটনা অস্বীকার করেছিল। কিন্তু তুরস্কের কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে যখন রোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসে তখন বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

তুরস্কের অনুসন্ধানে সৌদির বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা ছিল দৃশ্যমান। সৌদির এই কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনার যখন ১৩ দিন পরেও তুরস্কের তদন্তকারি কর্মকর্তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এভাবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল।

southeast

জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ বলেন, সৌদি আরব তুরস্কের তদন্ত করার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হত্যার ঘটনার পর ১৩ দিন পর্যন্ত তদন্তকারিদের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে দেয়নি। এ কারণে প্রথমদিকে তদন্তে সমস্যা হয়েছে।

এরপরও খাশোগিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ঘটনার তথ্য বের করেছিল তুরস্ক। সেই প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব হত্যার ঘটনা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। এই হত্যাকাণ্ডে সৌদি আরব ১১জনকে বিচারের মুখোমুখি করেছে।

সৌদি কর্মকর্তারা বলে আসছেন, সৌদি আরবের একটি দুর্বৃত্ত দলের হাতে খাশোগি খুন হন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

তদন্ত কমিটির প্রধান অ্যাগনেস ক্লামারড তদন্তের জন্য গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তুরস্ক সফর করেছেন।
তদন্তে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বাধা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন তিনি।

একই সাথে সৌদি আরবে ১১ জনকে বিচারের মুখোমুখি করার যে কথা বলা হচ্ছে, সেই বিচারের স্বচ্ছ্তা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্লামারড। তবে খাশোগির মরদেহের খোঁজ এখনও মেলেনি। জাতিসংঘের এই তদন্ত কমিটির আগামী জুন মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)