সাতক্ষীরা -৪ আসনে নির্বাচনী হিসাব বড় জটিল

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জ আংশিক) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭২৬। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৫ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮০১ জন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আসনটি দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলা গঠিত ছিল।

এছাড়া শ্যামনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল সাতক্ষীরা-৫ আসন। বর্তমানে দেবহাটা উপজেলা এবং কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন যুক্ত করা হয়েছে সাতক্ষীরা-৩ আসনের (আশাশুনি উপজেলাসহ) সাথে। অপরদিকে সাবেক সাতক্ষীরা-৫ আসন বিলুপ্ত করে শ্যামনগর উপজেলা এবং কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা হয়েছে সাতক্ষীরা-৪ আসন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জগলুল হায়দার। তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৪ আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৩ হাজার ৯০৯ জন। এরমধ্যে বৈধ ভোট ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৪২৭ জন এবং অবৈধ ভোট ছিল ১ হাজার ১৫৭। না ভোট ছিল ১। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এইচএম গোলাম রেজা লাঙল প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৫১ হাজার ১৪৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামাতের জিএম নজরুল ইসলাম দাড়িপাল্লা প্রতীকে পান ১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৫ ভোট।

২০০১ সালের পয়লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির (নাফি গ্রুপ) কাজী আলাউদ্দিন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৮ হাজার ১৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে পান ৬৬ হাজার ৫৬১ ভোট।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত হয় ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির শাহাদত হোসেন লাঙল প্রতীক নিয়ে ৪৬ হাজার ৭৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনসুর আহমদ নৌকা প্রতীকে পান ৪৪ হাজার ২৭২ ভোট। বিএনপির ওয়াজেদ আলী বিশ্বাস ৩২ হাজার ৬৩৫ ভোট এবং জামাতের আব্দুল গফ্ফার পান ৩০ হাজার ১৫১ ভোট। ঐ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের একে ফজলুল হক ৪০ হাজার ৭২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জামাতের গাজী নজরুল ইসলাম ৩১ হাজার ১৭২ ভোট, জাতীয় পার্টির অ্যাড. আবুল হোসেন ২৫ হাজার ৬১৬ ভোট এবং বিএনপির অধ্যক্ষ আব্দুল হক পান ১৩ হাজার ৮০১ ভোট।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সব দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিএনপির ওয়াজেদ আলী বিশ্বাস এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসনে নির্বাচিত হন বিএনপির অধ্যক্ষ আব্দুল হক।

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালনি সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনসুর আহমদ নৌকা প্রতীক নিয়ে মনসুর আহমদ ৪৪ হাজার ২২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামাতের জিএম আব্দুল গফফার গাজী পান ৪১ হাজার ৫৫২ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপির শাহাদাত হোসেন ২৬ হাজার ৬৭০ ভোট এবং জাতীয় পাটির অ্যাড. এম মুনসুর আলী ১৭ হাজার ৩৩২ ভোট পান।

ওই নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসনে ৪৫ হাজার ৭৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন জামাতের গাজী নজরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের একে ফজলুল হক ৩৭ হাজার ৩০৩ ভোট, জাতীয় পাটির আব্দুল হামিদ ৭ হাজার ৪৭৭ ভোট ও বিএনপির নজরুল ইসলাম ৩ হাজার ৮৯৬ ভোট পান।
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ সকল দলের বর্জনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৪ আসনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টিও অ্যাড. এম মুনসুর আলী। সাতক্ষীরা-৫ আসনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির অ্যাড. আবুল হোসেন।

১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৪ আসনে ৪১ হাজার ১৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মুনসুর আহমেদ। বিএনপির অ্যাড. এম মুনসুর আলী পান ৩৯ হাজার ৩৯৫ ভোট। এ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৫ আসনে ২৫ হাজার ৬৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টিও অ্যাড. আবুল হোসেন। আওয়ামী লীগের একে ফজলুল হক ২১ হাজার ৮৯৭ ভোট এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বখতিয়ার আহমেদ পান ১৪ হাজার ১৭৭ ভোট।

১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিএনপির অ্যাড. এম মুনসুর আলী ৩৫ হাজার ৬৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ এড. এএফএম এন্তাজ আলী ১৭ হাজার ৩১৫ ভোট ও জাসদের ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার পান ১৩ হাজার ৬১২ ভোট। ওই নির্বাচনে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসনে বিএনপির ডা. আফতাবুজ্জামান ২৪ হাজার ৯১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের একে ফজলুল হক পান ৯ হাজার ১২৭ ভোট।

১৯৭৩ সালের ৭ মর্চি অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৪ আসনে ৬২ হাজার ৭৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের অ্যাড. এএফএম এন্তাজ আলী। ঐ নির্বাচনে জাসদের ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার পান ১৩ হাজার ৭৫৭ ভোট। ওই নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মো. মোহাসিন ৪৫ হাজার ১৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জাসদের বিশ্বনাথ দাশ পান ৮ হাজার ১৮৮ ভোট।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)