সরাসরি উন্মুক্ত বিতর্ক চান প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারাভিযান শুরু হবে। এই প্রচারাভিযানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সিলেটের হজরত শাহ জালাল (রাঃ) এর মাজার থেকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন। ঢাকায় ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি শেষ নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে দেশে কমবেশি ১৫টি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সুস্থ গণতান্ত্রিক বিতর্কের স্বার্থে সরাসরি বিতর্কেও অংশগ্রহণ করতে চান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচনে যেমন শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে তাঁদের নীতি এবং কৌশল নিয়ে বিতর্ক করেন, তেমন বিতর্ক চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এরকম বিতর্কে আগ্রহের কথা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যদের বলেছেন। এদের একজন  বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মনে করেন নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এরকম বিতর্ক হওয়া উচিৎ। যাতে ভোটাররা বুঝতে পারে কোন দল তাদের জন্য কি করতে পারে।’ আওয়ামী লীগের ঐ নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মনে করেন ঐ ভাষণ একঘেয়েমীপূর্ণ। মানুষ এসব কথা শুনতে আগ্রহী নয়। বরং তিনি মনে করেন, একটি দল ক্ষমতায় গেলে কি করবে, অতীতে কি করেছে তা নিয়ে সরাসরি বিতর্ক হতে পারে। এই বিতর্কে প্রধান প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর শীর্ষনেতারা অংশ নিতে পারেন। দর্শকরাও অংশগ্রহণ করতে পারেন। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এরকম উম্মুক্ত বিতর্কের জন্য তাঁরা নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব দেয়ার কথা ভাবছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখন প্রশ্নাতীত। অন্য যেকোন নেতার চেয়ে তিনি এখন অনেক বেশি জনপ্রিয়। তাঁর সামনে আছে বিগত ১০ বছরের সাফল্য স্মৃতি আর ২১০০ সাল পর্যন্ত কর্ম পরিকল্পনা। রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতায় তিনি যে এখন সবার সেরা তা প্রমাণিত। বিরোধী দলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংলাপে তিনি ছিলেন সপ্রতিভ। বিরোধী পক্ষরাও তাঁর প্রশংসায় মুখর হয়েছেন। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চায়। এরকম উন্মুক্ত বিতর্ক হলে শেখ হাসিনা যে জয়ী হবেন তা নিয়ে সংশয় নেই কারো। সেটা ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষে জোয়ার আনবে বলে মনে করছে দলটি। এরকম বিতর্কে শেখ হাসিনার সংগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেন এবং বামফ্রন্টের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

উল্লেখ্য, ভারতেও এখন নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জনগনকে জানাতে উন্মুক্ত বিতর্কের পদ্বতি চালু করেছে। ভোটারদের সিদ্বান্ত গ্রহনের জন্য এরকম বিতর্ক এখন গনতান্ত্রিক দেশগুলোতে বিপুল জনপ্রিয়। 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)