সৌদিতে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

সৌদিতে বন্দী নারী অধিকারকর্মীদের ইলেকট্রিক শক, বেত্রাঘাত ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। দেশটির ধাভান কারাগারে এ নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। একই অভিযোগ এনেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। খবর বিবিসি

চলতি বছরের শুরুতে সৌদি একাধিক প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী ও নারী অধিকারকর্মীদের আটক করে। সর্বশেষ প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বন্দী নারীদের ইলেকট্রিকশক দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বেত্রাঘাতও করা হয়েছে। ফলে তারা ঠিকমতো উঠে দাঁড়াতে ও হাঁটতে পারছেন না। এদের মধ্যে একজনের সঙ্গে যৌন হয়রানি করেছেন মুখোশপরিহিত এক জিজ্ঞাসাকারী।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, কমপক্ষে তিনজন নারী বন্দীকে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে ও বেত্রাঘাত করা হয়েছে। যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটসের অভিযোগ, এসব নারীদের জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরা হয়েছে ও চুমু দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিবিসি থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষের মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সৌদির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

গত বছর নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুলআজিজ আল সৌদি ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি এমন সময়ে দেয়া হয়, যখন নারী অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ধরপাকড় অব্যাহত ছিল।

এ পর্যন্ত ১৭ জন অধিকার কর্মীকে আটক করেছে সৌদি। এদের মধ্যে পাঁচজনই নারী। আটকের পর আটজনকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছে।

সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি একজন প্রগতিশীল সংস্কারক হিসেবে দাবি করে থাকেন, তার নেতৃত্বে সৌদিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তবে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে খরগহস্ত তিনি।

সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগি। পরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। স্বয়ং মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, খুব সম্ভবত ক্রাউন প্রিন্স এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তবে সৌদি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)