নিয়ে ফেলুন হানিমুনের প্রস্তুতি

বিয়ের মৌসুম চলছে। আর এই মৌসুমকে সামনে রেখেই অধরা আর শিশিরের বিয়ে হতে যাচ্ছে আর এক সপ্তাহের মধ্যেই। নিজেদের পছন্দেই বিয়ে। অনেক আগে থেকেই দুজনের ইচ্ছে একটা জমকালো হানিমুন সারবে, এজন্য পরিকল্পনাও করে রেখেছে কোথায় যাবে, কতদিন থাকবে। বিয়ের প্রস্তুতির যাবতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে চলছে হানিমুনের প্রস্তুতিও, সঙ্গে রয়েছে পরিবারও।

এখনকার দিনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ হানিমুনটাও। এমনকি বিয়ের বাজেট কমিয়ে ধরার প্রবণতাও থাকে হাত খুলে হানিমুনটা শেষ করার জন্য। হানিমুনে যাবেন ভালো কথা, তার জন্য প্রস্তুতি আর গোছগাছেরও তো অনেকটা প্রয়োজন। কীভাবে করবেন সব পরিকল্পনা তা নিয়ে থাকছে আলোচনা-

মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার আগে সঠিক প্ল্যান আর সময়মতো সব গুছিয়ে রাখা দরকার। যাতে দাম্পত্যের শুরুটা ভালো হয়। এদেশে কক্সবাজার, রাঙামাটি, সিলেট আর বাইরের দেশ বলতে থাইল্যান্ড, নেপাল আর ভারতই মূল লক্ষ্য। সে যেখানেই যান না কেন হানিমুন কীভাবে গুছিয়ে করতে পারেন সেটার জন্য আগেই ভেবে নিন।

দুজন মানুষের ভালোবাসায় ভরপুর হানিমুন পারফেক্ট আর ইউনিক হবেই, তা সেটা পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন। শুধু থাকতে হবে একটা স্বচ্ছ পরিকল্পনা আর ফুরফুরে মেজাজ। মধুচন্দ্রিমায় যাবার হাতে অবশ্যই একটা প্ল্যান থাকতে হবে, কবে আর কোথায় যাবেন, কত দিন থাকবেন, কী কী করবেন। সবকিছুর তালিকা প্রয়োজন। আধুনিক বর-কনের এমন পরিকল্পনাকে হানিমুন কাউন্টডাউন বলে।

প্রথমেই ঠিক করুন কোথায় যাবেন। দুজনের কমন পছন্দের গন্তব্য কিংবা ইন্টারেস্টিং অ্যাক্টিভিটি আছে এমন জায়গাগুলো বেছে নিন। নিজেদের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মেলে এমন জায়গা পছন্দ করুন। ট্রাভেল জার্নাল, ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিন। বিয়ের ডেটের সঙ্গে মিলিয়ে জেনে নিন, ওই সময়টায় কোথায় কেমন আবহাওয়া থাকতে পারে। এবার শর্টলিস্ট করা স্থানগুলোর সঙ্গে বাজেট মিলিয়ে নিন। কত টাকা হানিমুন বাবদ খরচ করতে পারবেন ভাবুন। পরিবারের সঙ্গেও আলাপ করে নিন। যাতে হানিমুনের বাজেটের সঙ্গে মিলিয়ে বিয়ের আর বাকি সব খরচ করতে পারেন। তারিখও বিকল্পসহ নির্ধারণ করে রাখুন।

দেশের বাইরে গেলে কম খরচে টিকিট পাবেন যদি আগে থেকেই বুকিং দিতে পারেন। বিয়ের আগে থেকেই বুকিং এবং ভিসা-সংক্রান্ত কাজগুলো করে ফেলুন। কিছু দেশে এখন অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা রয়েছে। পাসপোর্ট, ছবি, এয়ারটিকিট বুকিং এই সম্পর্কিত কাজ জমা না করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে এগুলোও গুছাতে থাকুন।

ফাইনাল বুকিংটা দেবার আগে আরেকবার চেক করে নিন, বাজেট, তারিখ- সবকিছু। হোটেলগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর করুন। কোথায় থাকবেন, সেটা মাথায় রাখা জরুরি। ট্রান্সপোর্ট কী হবে, থাকার হোটেলের ব্যবস্থা করতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখুন।

কোন সুটকেস নিয়ে যাবেন, হানিমুনের জন্য কী কেনার আছে তা কিনুন। লাগেজ হতে হবে হালকা। সঙ্গে নেয়ার জন্য পোশাক-আশাক আর দরকারি জিনিসের স্মার্ট একটা তালিকা করুন। কত দিন থাকবেন, কী কী করবেন, হানিমুন ডেস্টিনেশনের আবহাওয়ার হিসেবে জামাকাপড়, জুতা- এসবের তালিকা বানান। সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু ওষুধ নিতে ভুলবেন না।

ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে সবকিছু আরেকবার ঝালাই করে নিন। হোটেলগুলোর ঠিকানা, যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার কারও কনটাক্ট নাম্বার- এসব ফোনবুক ছাড়াও ডায়েরিতে আলাদাভাবে লিখে রাখুন। ব্যাংক এবং এয়ারলাইনসের যাবতীয় কাজ সেরে ফেলুন। কোনো ডকুমেন্টের প্রিন্ট অথবা ফটোকপির দরকার হলে করে নিন। দেশের কোনো লোকেশন হলে আর সেটা যদি বাসে অথবা ট্রেনে যাওয়ার হয়, তবে টিকিট করে ফেলুন। শেষ সময়ের কিছু কেনাকাটা দরকার হলে করে নিন।

পোশাক, কসমেটিকস, সানস্ক্রিন ইত্যাদি কিনে ফেলুন এবং লাগেজ একদম রেডি করুন। ছবির জন্য ভালো ক্যামেরা বা স্মার্টফোন রাখুন। সেগুলোর ব্যাটারি, চার্জার লাগেজে ঢুকিয়ে নিন। ভ্রমণের টিকিট, বাকি সব কাগজপত্র একবার ফটোকপি করে বাড়ির দায়িত্বশীল কারও হাতে দিয়ে দিন। কোনো কারণে বিপদে কাজে লাগবে।

হোটেল এবং এয়ারলাইনসের খোঁজ নিন আরেকবার। দেশের বাইরে হলে মানি ট্রানজেকশনের কাজটা সেরে ফেলুন বিয়ের আগ দিয়েই।

আর মনে রাখবেন, হানিমুন যেন ক্লান্তিকরভাবে শেষ না হয়। যথাসম্ভব সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। নতুন জায়গায় দেখেবুঝে যাবেন। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার ঘড়ির সঙ্গে চেষ্টা করবেন ঘুমের সময় মিলিয়ে নিতে। লোকাল পুলিশ হেল্পলাইনটা জেনে নিন। জরুরি এবং মূল্যবান জিনিস নিরাপদ রাখতে রুমের কিংবা হোটেলের লকার ব্যবহার করুন।

সবশেষে যেটা মনে রাখতে হবে, আপনাকে রিল্যাক্স থাকতে হবে। সঙ্গী আর প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)