তালার ঝুঁড়িঝাড়ার মাঠে পুরাকীর্তির সন্ধান – এলাকাবাসীর নানা ভাবনা

আগোলঝাড়া, ডাঙ্গানলতা ও আটারই গ্রামের ছোট একটি বিনোদন কেন্দ্র এই ঝুঁড়িঝাড়ার মাঠ। প্রায় ৫০০/৬০০ বছরের পুরানো এই ঢিবিটি। মাঠটির আশেপাশে রয়েছে নিচু জমি।কৃষকরা কাজ শেষে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। এমনকি বিকেল বেলাতে দেখা মেলে তিন গ্রাম সহ আশেপাশের মানুষদের মিলনমেলা। সেখানে বসে চলে শ্রেণী বিশেষ আড্ডা। মাঠাটি প্রায় একবিঘা জমি নিয়ে। চারপাশে রয়েছে ছোটবড় গাছ। তবে এই মাটির ঢিবিতে পুরাকীর্তির সন্ধান পেয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। এই নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।


তালা উপজেলার ডাঙ্গানলতা গ্রামে মাঠের মধ্যে পুরনো একটি মাটির ঢিবিতে পুরাকীর্তির সন্ধান পেয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সোমবার সকাল থেকেই পুরাকীর্তির সন্ধানে খনন কাজ শুরু করেছে প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের দলটি। মাটি খোঁড়ার শুরুতেই একটি ইটের তৈরি দেয়াল ও পরের দিনে দুইটি কয়েনের সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ডাঙ্গানলতা গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, আমরা বাব-দাদাদের মুখে শুনেছি এক সময় জ্বীনরা পাশের একটি পুকুর খনন করে ফজরের আজানের সময় কাজ শেষ করে এখানে এসে মাটি ঝাড়ে। তারপর থেকে এটি ঝুঁড়িঝাড়ার মাঠ নামে পরিচিত। তবে এখন দেখছি অন্য রকম। সেই মাটির নিচে একটি ইটের তৈরি দেয়ালের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমরা তো অবাক হয়ে যাচ্ছি।
স্থানীয় বাসীন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, আমাগী গ্রামে একজন এই মাঠ থেকি একখান ইট নিয়ে গিছিলো। রাতে সে স্বপ্নে দেখলো যে ইট যদি মাঠে রেখি না আসে তাহলে তার পরিবার পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু এখন দেখতিছিতো এরা সব ইট তুলি ফেলতিছ।
ডাঙ্গানলতা গ্রামের আক্তার হোসেন জানান, ঝুঁড়িঝাড়ার মাঠের মাটির নিচে পুরাকীর্তির সন্ধান পেয়েছে আমরাতো কখনো কল্পনা করতে পারিনি। কাজটি শেষ হলে আমরা সকলেই আসল ইতিহাসটি জানতে পারবো এবং সঠিক ইতিহাসটি জানার জন্য সকলেই অপেক্ষা করছি।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী কাস্টরিয়াম মো. শাহিন আলম জানান, বহু বছরের পুরনো এই মাটির ঢিবিটি ঝুঁড়িঝাড়ার মাঠ নামে এলাকায় পরিচিত। এটি ২০১২ সালে প্রত্নতত্ত্বি বিভাগের আওতায় সংরক্ষিত হয়। প্রতি বছর আমরা নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে মাটির নিচে যে সম্পদ থাকে সেগুলো উদ্ধার করি। এ বছর চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরায় কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, এখানে বহু বছর আগের কোনো পুরাকীর্তি মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে সেটি উদ্ধারের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। শুরুতেই একটি ইটের তৈরি দেয়ালের সন্ধান পেয়েছি ও পরে দুইটি কয়েন পেয়েছি। তবে সেটি কোনো বসতবাড়ি, মসজিদ না মন্দিরের সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। খনন কাজ শেষ হলে আমরা বিস্তারিত বলতে পারবো।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরিন বলেন, সরকারের অনুমতিক্রমেই প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতিনিধি দলটি খনন কাজ শুরু করেছে। খননকাজ শেষ হলেই বিস্তারিত জানা যাবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)