কালিগঞ্জে ইটভাটার দুই শ্রমিককে গুম করার অভিযোগ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইট ভাটার সর্দারের খপ্পরে পড়ে দুই যুবক পাঁচ বছর যাবৎ নিখোঁজ, সন্ধান চেয়ে দুই বিধবা মায়ের পুলিশ ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে আকুতি । স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বর ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হলেও ধুরন্ধর ইট ভাটার সর্দার নানান তালবাহানা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে অভিযোগ দিয়েছেন অসহায় দুই বিধবা মা। কালিগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক শুধাংশ শেখর হালদার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শরিফুলকে নোটিশ করেন এবং ধার্য্যদিনে হাজির হয়ে ইটভাটার দুই শ্রমিককে হাজির করার জন্য ১৫ দিনের সময় নেন ভাটার সর্দার শরিফুল। অথচ সময় নেওয়া সময় পার হয়ে গেলেও সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে হতাশায় প্রহর গুনছেন অসহায় বিধবা মাসহ পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি কালিগঞ্জ উপজেলার কুশলিয়া ইউনিয়নের ঘোজাডাঙ্গা গ্রামেই ঘটেছে।
সরেজমিন ও থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার ঘোজাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হামিদ গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ( ইট ভাটার সর্দার) পাঁচ বছর পূর্বে দঃ শ্রিপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে খলিল হোসেন (১৬) ও একই গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে ফজলুর রহমান(১৭) কে ইট ভাটায় কাজ দেওয়ার নাম করে ভারতে নিয়ে যায়। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত কোনো খোঁজ পাননি তার পরিবার। অথচ খালিদ ও ফজলুর নাম করে তাদের দুইজনের জন্মনিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে শরিফুল হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
দেশ বিদেশের অনেক ইটভাটা থেকে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সন্তানদের খোঁজে ফজলুর রহমানের মা ছবিরণ বিবি ও খালিদ হোসেনের মা খাদিজা বেগম এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি, মেম্বর, চেয়ারম্যানকে জানিয়েও প্রতিকার না পেয়ে থানা পুলিশের দারস্থ হয়েছেন। ধুরন্ধর শরিফুল ইসলাম থানার নির্দেশ অমান্য করে বহাল তবিয়তে আছে। ঘটনার সত্যতা জানতে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুল্যাহ গাজী ( পুটু মেম্বর), চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার সরকারের নিকট কথা বললে এপ্রতিধিকে জানান, শরিফুল দুই যুবককে নিয়ে যায় ঠিকই কিন্তু পাঁচ বছর যাবৎ যে তারা বাড়িতে আসেনা এটা জানা ছিলো না। ঘটনাটি যেহেতু থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে সেহেতু আইন মোতাবেক কাজ হবে আমরা সহযোগিতা করবো। অপরদিকে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ পরিদর্শক শুধাংশ শেখর হালদার জানান, অভিযোগের তদন্তের কাজ চলছে, অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে অভিযুক্ত শরিফুলের নিকট জানতে চাইলে ঘটনার অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে জানান।
তবে খালিদ ও ফজলুর জন্ম নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে শ্যামনগরের ইশ্বরিপুর এলাকার ভাটার মালিকের নিকট থেকে চল্লিশ হাজার টাকা গ্রহণ করার কথা স্বীকার করেছেন।