দেবহাটায় স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অমলের বিরুদ্ধে তদন্ত : টাকা ফেরত সহ বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ

দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অমল চন্দ্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের দেড় মাস পর তদন্ত শুরু। নিজেকে বাঁচতে অবশেষে কয়েক জন দোকানদারের কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়নের নামে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিয়ে বিভিন্ন মহলে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। জানা যায়, দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অমল চন্দ্র ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইন্সেস প্রদানের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ ওঠে। যা গত ২৮ আগস্ট বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগামী রবিবার তদন্তে আসার কথা আছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে যোগদানের পর দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে অমল চন্দ্র। সে সময়ে বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে ২০১৩ সালে অমল চন্দ্রকে শাস্তি মূলকভাবে বদলি করা হয় শ্যামনগর উপজেলায়। সেখানে এক বছর যেতে না যেতে বিভিন্ন মহলে তদবির করে আবারও দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করে অমল চন্দ্র। কিন্তু যোগদানের পর থেকে থেমে নেই অমলের দুর্নীতি। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে ভেজাল খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে শুরুর আগেই ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। সে সরকারি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে লাইন্সেস নবায়ন ফি বাবদ বার্ষিক ২শ’ ৫০ টাকা পরিবর্তে ৭শ’ থেকে ১ হাজার’ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এ অর্থের একটি অংশ ডিসট্রিক্ট স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রথিন্দ্র নাথকে ভাগ দিয়ে নিজের চেয়ার ঠিক রেখেছে বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানাগেছে। এদিকে, উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ফুলবাড়িয়ায় ২টি, চালতেতলায় ২টি, পাতাখালিতে একটি, পারুলিয়া বাজারে ১৮টি, সখিপুর বাজারে ৪৫টি, ধোপডাঙ্গায় ৪টি, পাচপোতায় একটি, সখিপুর মোড়ে ৯টি, কামটায় ৩টি, ঈদগা বাজারে ১৪টি, মাঘরী ৩টি, চন্ডিপুরে ৪টি, দেবহাটায় ১৫টি, সুশিলগাথীতে ৩টি, টাউনশ্রীপুর ১১টি, চর শ্রীপুর ২টি, রহিম পুরে ২টি, পাতাখালিতে একটি, ঘলঘলিয়ায় ৫টি, ভাতশালায় একটি, চাদপুরে ২টি, নাংলায় ৭টি, হাদিপুরে ৭টি, কুলিয়ায় ৯১টি, সুবর্ণাবাদ ১০টি, টিকেট ৮টি, কোমরপুরে ৫টি, সেকেন্দ্রায় ৫টি, গরুরহাটে ৩টি সহ মোট ৩৮২টি হোটেল, মুদিখানা, বেকারী, ভ্যরাইটিস, চানাচুর ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, মাংসের দোকান, মাছের আড়ত, মৎস্য ডিপোসহ কাঁচা-পাকা ফল ও খাবারের দোকানে লাইন্সেস নবায়ন করা হয়েছে। তবে উপজেলায় রয়েছে কয়েক শত দোকান। যার অধিকাংশতে লাইন্সেস নেই। তাছাড়া লাইন্সেস বিহীন অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিয়ে থাকে অমল চন্দ্র। আর এই আর্থিক লেনদেনের কারণে আজও পর্যন্ত কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করিনি সে। যার কারণে উপজেলার অধিকাংশ হোটেল রেস্তরা, বেকারী সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রায়ই দেখা মেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের। এ ব্যাপারে অমল চন্দ্রের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দুই মিনিট পরে কথা বলছি বলে ফোনটি কেটে দেয়। এবিষয়ে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রথিন্দ্র নাথের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে হাসপাতাল সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল গণি বলেন, দুনীতি পরায়ণ সেনেটারী ইন্সপেক্টর অমল চন্দ্রের বিরুদ্ধে বিগত দিনেও অনেক অভিযোগ ছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)