সর্বনাশের থেকে মাত্র ১২ বছর দূরে দাঁড়িয়ে পৃথিবী!

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে অনেকদিন ধরেই সাবধান করছেন বিজ্ঞানীরা। আর দীর্ঘদিনের এই পরীক্ষার ফল অবশেষে হাতে এলো। আর সেখানে দেখা গেলো সর্বনাশের থেকে মাত্র বারো বছর দূরে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী!

‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) একটি রিপোর্টে জানা গেছে, উষ্ণায়নের কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর এতে শোচনীয় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে ভারত।

রিপোর্ট বলছে, অদূর ভবিষ্যতে মারণ তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হতে হবে ভারতকে। ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গির মতো রোগ বাড়বে। গরমে আক্ষরিক অর্থেই ধুঁকবে মেগাসিটিগুলো। যার মধ্যে সবার আগে থাকছে কলকাতা!

এদিকে, হাতে আছে মাত্র ১২টা বছর! না হলে ২০৩০ সালের মধ্যেই ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাবে আরো ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাতে, ক্রান্তীয় অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রতলের উচ্চতা বাড়বে। যা ডেকে আনবে প্লাবন। বিপন্ন হবে বদ্বীপ এবং দ্বীপরাষ্ট্রগুলি। পরপর ঝড় আছড়ে পড়বে বিভিন্ন প্রান্তে।

২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি সইয়ের আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়া পর্যন্ত পৃথিবী নিরাপদ।

কিন্তু আইপিসিসি-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সামগ্রিকভাবে ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা এখনই গত ১৫০ বছরের তুলনায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এবং তাতেই যা অবস্থা, সেটা সমুদ্রতল বিপদসীমা ছাড়ানোর জন্য যথেষ্ট।

ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেই বেঁধে রাখতে হবে। কিন্তু এখন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যে হারে বাড়ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতেই তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে।

এখন তাপমাত্রার বৃদ্ধি যদি ১.৫ ডিগ্রিতে বেঁধে রাখতে হয়, তা হলে ২০৫০ সালের মধ্যে গোটা পৃথিবীকে ‘কার্বন নিরপেক্ষ’ হতে হবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট রিসার্চ প্রোগ্রাম-এর প্রধান এবং আইপিসিসি রিপোর্টের মূল লেখক মাইলস অ্যালেন বললেন, ‘কার্বন নিরপেক্ষ’ হওয়া মানে প্রকৃতি থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ ও ত্যাগের মধ্যে একটা সমতা রাখা। সেটা অর্জন করতে হলে প্রতি বছর আনুমানিক ২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি ডলার শক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে, যা কিনা বিশ্বের জিডিপি-র ২.৫ শতাংশ। গ্রিন হাউস গ্যাস তৈরি অবশ্যই কমাতে হবে। কমাতে হবে গ্যাজেটের ব্যবহার। সেই সঙ্গে জোর দিতে হবে ‘জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ে।

কী সেই পদ্ধতি? বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নিয়ে তা থেকে জ্বালানি প্রস্তুত করা বা মাটিতে মিশিয়ে দেয়া। পদ্ধতিটি যদিও বেশ খরচসাপেক্ষ। ব্যাপক বৃক্ষরোপণও একটা উপায় হতে পারেন বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা। বাঁচাতে হবে জঙ্গল।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)