ট্রাম্পের বাবা আসলে কে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে গুঞ্জনের কমতি নেই। এবার যুক্ত হয়েছে তার পরিবার। বিশেষ করে তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্প এবার আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে।

নিউইয়র্ক রাজ্যের কর বিভাগ নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন তদন্ত করেছে বলে নিশ্চিত করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পরিবারকে কয়েক মিলিয়ন ডলারের কর ফাঁকি দিতে সাহায্য করেন। এভাবে তারা সম্পদ বৃদ্ধি করেছেন।

এদিকে ট্রাম্প নিজেকে একজন স্ব-প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। তার ভাষ্য, তিনি পরিবারের কাছ থেকে খুব সামান্যই সাহায্য নিয়েছেন।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ দাবি কতটা যৌক্তিক? আর কে ছিলেন ফ্রেড সি. ট্রাম্প? ইতিহাস বলছে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে ফ্রেডেরিক ট্রাম্পের বাবা মারা যান। ১৯২০ এর দশকে ‘কুইন্স’ অঞ্চলে শুরু করেন ব্যবসা। মায়ের সঙ্গে কনস্ট্রাকশন ব্যবসা শুরু করেন। সাফল্যের শুরু এখান থেকেই। এক পরিবারের উপযোগী ছোট বাড়ি বিক্রির মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হয় ট্রাম্পের বাবার ব্যবসা।

ফ্রেড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে মাঝারি আয় করা পরিবারদের সহজে গৃহায়ন সুবিধা দেন। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দারুণ ব্যবসা সফল হন। সে সময় গৃহায়ন খাতে মার্কিন সরকারের বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বড় করেন। উৎকৃষ্ট মানের বিল্ডিং তৈরিতে প্রসিদ্ধ ছিলেন। এখনো তার বানানো অনেক স্থাপনা টিকে আছে।

ট্রাম্পের বাবা সাধারণত সরকারি অর্থায়ন প্রকল্পগুলো কম মূল্যে কিনে নিতেন। পরে তা বেশি দামে বিক্রি করতেন। এই পদ্ধতি আইনগতভাবে সিদ্ধ হলেও ১৯৫৪ সালে কংগ্রেসের সামনে জবাবদিহি তাকে করতে হয়।

১৯৭০ সালে তার নামে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ আনা হয়। তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ও পুয়ের্তো রিকোর অভিবাসীদের কাছে বাড়ি ভাড়া না দেয়ায় অভিযোগ ওঠে তার নামে।

ফ্রেডের বিরুদ্ধে সে সময় নাগরিক অধিকার আইনে মামলা হয়। পিতার পক্ষে আগ্রাসী ভূমিকা রাখায় পত্র-পত্রিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়মিত ছাপাও হয়। শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের অবৈধ বা অনৈতিক কার্যক্রম প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা আর আগায়নি।

ব্যবসা সফল বাবা তার ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে একবার বলেছিলেন, ট্রাম্পের দূরদর্শিতা প্রশংসনীয়। সে যাতেই হাত দেয় তাই যেন সোনায় পরিবর্তিত হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প একবার বলেছিলেন, তিনি তার বাবার কাছ থেকে ১ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে ফ্রেড ট্রাম্পের ‘ক্ষুদ্র’ আঞ্চলিক গণ্ডি থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। আর ১ মিলিয়ন ডলার সুদসহ ফেরত দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।

তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে ভিন্ন কথা। এর ভাষ্য, বর্তমান হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাবার রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য থেকে অন্তত ৪১৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের সম্পদ পেয়েছেন। যার মধ্যে একটি বড় অংশই ‘সন্দেহজনক কর পরিকল্পনা’ অবলম্বন করে তৈরি করা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)