মহাত্মা গান্ধীর ১৪৯তম জন্মদিন

ভারতের মুক্তি সংগ্রামের নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর (মহাত্মা গান্ধী) ১৪৯তম জন্মদিন আজ। ১৮৬৯ সালের এই দিনে ভারতের গুজরাটের পোরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন অহিংস নীতির প্রতিমূর্তি মহাত্মা গান্ধী।

সরকারিভাবে ভারতে দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। আর বিশ্বে দিনটি পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে। প্রতি বছরের মতো আজো নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে ‘গান্ধীজয়ন্তী’ পালিত হচ্ছে।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্ণধারসহ তিনি একাধারে তৎকালীন শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং গুরু হিসেবে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। অহিংসা, সত্যাগ্রহ এবং স্বরাজ- এই তিন নীতির প্রবক্তা গান্ধীর সামনে অনুপ্রেরণা ছিল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং বুদ্ধের জীবন দর্শন। গান্ধী বিশ্বাস করতেন, গভীর বিশ্বাস বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৮৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বোম্বে (বর্তমানে মুম্বাই) ফিরে আসেন। সেখানে কিছুদিন আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন গান্ধী। এর দুই বছর পর ‘দাদা আব্দুল্লাহ অ্যান্ড কোং’ এ চাকরি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যান।

সেখানে অবস্থানকালে বর্ণবাদী আচরণ ও বৈষম্যের শিকার হন গান্ধী। একদিন ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কামরার বৈধ টিকেট থাকা সত্ত্বেও তাঁকে তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় গিয়ে বসতে বলা হয়। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ট্রেন থেকে জোর করে নামিয়ে দেয়া হয়। আরেকদিন এক ইউরোপীয় যাত্রীর জন্য ট্রেনে জায়গা ছেড়ে দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে ট্রেনের চালক প্রহার করে। ভারতীয় হওয়ায় বেশ কিছু হোটেলে স্থান পাননি তিনি৷ এছাড়া একদিন ডারবান আদালতের এক ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে পাগড়ি খুলতে বললে তিনি তা অস্বীকার করেন। এসব ঘটনা গান্ধীকে সমাজ সচেতন, প্রতিবাদী এবং বর্ণবাদবিরোধী কাজে সক্রিয় করে তোলে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের অধিকার আদায়ে নানা উদ্যোগ নেন এই মহান নেতা। সেখানে বসবাসরত প্রায় ৬০ হাজার ভারতীয়র জন্য প্রকাশ করেন ‘ইন্ডিয়ান অপিনিয়ন’ নামের একটি পত্রিকা। ১৯১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারত ফিরে আসেন মহাত্মা গান্ধী। এরপর থেকে ভারতের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেন এই সংগ্রামী নেতা ও গুরু। ১৯২১ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্ব গান্ধীর কাঁধে অর্পিত হয়।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য দীর্ঘদিন অনশন এবং কারাগারে কাটাতে হয়েছে মহাত্মা গান্ধীকে। তবে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রার্থনা সভায় যাওয়ার সময় নাথুরাম গডসের গুলিতে প্রাণ হারান মহাত্মা গান্ধী৷

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)