কাদাকাটি আইডিয়াল গার্লস স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ অনিয়ম দিয়ে শুরু
আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি আইডিয়াল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ কাজ অনিয়মের মধ্যদিয়ে এগিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অজ্ঞাতেই কাজ করে যাওয়া হলেও প্রতিকারে কেউ এগিয়ে না আসায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকার জনগণ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, বিদ্যালয়ে মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টার হিসাবে ৩ তলা বিশিষ্ট (নীচতলা উন্মত্ত) ভবন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। প্রায় ২ কোটি ৭ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ২ বছরের মধ্যে। ভবনের পাইলিং এর কাজ চলছে। ৪২টি পাইলিং নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ডিপ করার কথা ৭২ ফিট করে। কিন্তু তা করা হয়নি। নির্মাণ কাজের শুরু থেকে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। রডের লেবেল ঠিক ছিলনা। লেবেল ঠিক না রেখেই ঢালাই করা হয়েছে। প্রতিটি পাইলিং-এ ২৯ বস্তা সিমেন্ট দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ২৩ বস্তা করে। পিলারে শিডিউল মোতাবেক রড দেওয়া হয়নি। সিমেন্টের ব্যবহারেও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। সিম-১ সিমেন্টের ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও তদস্থলে সিম-২ সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। রডের ব্যবহারেও রয়েছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে হঠাৎ করে ঢালাই এর কাজ করা হয়। কাজের সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি, দায়িত্বপ্রাপ্ত পিআইও অফিসের প্রতিনিধি, এমনকি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাউকে দেখা যায়নি। ঠিকাদারের লোকজন নিজেদের ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনের অনিয়মের পরিস্থিতির ব্যাপকতা দেখে এলাকাবাসী হতাশা গ্রস্ত হয়ে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক ইখলাছুর রহমান বর্তমানে হজ্জ্বব্রত পালনে সৌদিতে আছেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক ইকরামুল হক বলেন, প্রধান শিক্ষক হজে¦ যাওয়ায় আমাকে কাজ দেখে নেওয়ার কথা, কিন্তু ঢালাই এর কথা আমাদেরকে জানান হয়নি। পরে কাজের স্থানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলা হয়, অফিসে জানিয়েছি। এব্যাপারে ঠিকাদারের মোবাইলে তথ্য জানতে কথা বললে অপরপ্রান্ত থেকে জানান হয়, কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও আসেননি। কাজ করে যাচ্ছি, যা করলে ভাল হয় করতে পারেন। পিআইও অফিসের কার্য সহকারী শফিউল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ঠিকাদার নিজেদের ইচ্ছেমত কাজ করছেন। আমি কাজ দেখতে গিয়েছি, তখন ঠিকাদারের ম্যানেজার/কর্মরতরা বলেন, আমাদের মতামতে কাজ হবে। কারো মতামত নেয়া হবেনা। ঠিকাদারের সাথে কখনো সাক্ষাৎ হয়নি। সিমেন্টের ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগে প্রেক্ষিতে কার্যসহকারী সিম-১ সিমেন্ট ব্যবহারের কথা থাকলেও সিম-২ সিমেন্টের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে স্বীকার করেন। ঢালাইয়ের মাত্র আধাঘণ্টা আগে তাকে জানান হয়, যখন যাওয়ার সুযোগ ছিলনা। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বিমল চন্দ্র গাইন জানান, স্কুল ভবনের কাজে অনিয়ম হচ্ছে। তারা কাউকে তুয়াক্কা করেনা। এভাবে কাজ হলে ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিষয়টি যথাযথ তদন্তপূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছে।