কয়লা চুরি হয়নি, সিস্টেম লস হয়েছে : দাবি সাবেক এমডির

কয়লা চুরি হয়নি, সিস্টেম লসের কারণে ঘাটতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব উদ্দিন আহমদ।

বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও সংস্থাটির উপ-পরিচালক শামছুল আলমের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন বিসিএমসিএল এর এই সাবেক এমডি।

হাবিব উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা কোনো দুর্নীতি করেননি এবং কয়লা চুরিও হয়নি, সিস্টেম লসের কারণে ঘাটতি হয়েছে। আমরা দুর্নীতি করেছি কি না তদন্তের পরই প্রমাণ হবে।’

কয়লার এই সিস্টেম লসের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষারও দাবি জানান তিনি।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা হাবিব উদ্দিন আহমদকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের উপ-পরিচালক সামছুল আলম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে তার (হাবিব উদ্দিন আহমদ) কাছ থেকে অনেক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে।

গতকাল হাবিব উদ্দিন আহমদ ছাড়াও আরও সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরা হলেন- সাবেক মহাব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন), কোম্পানি সেক্রেটারি আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন সরকার, মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম এবং উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক এ কে এম খালেদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোরশেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অপারেশন) জোবায়ের আলীকে দুদকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ ছাড়া আজ বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) আরও তিন আসামিসহ নয় কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চতুর্থ দফায় সাবেক চার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা ঘাটতির অভিযোগে বিসিএমসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বাদী হয়ে কোম্পানির সদ্য সাবেক এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদসহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ২৪ জুলাই দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা করেন। তফসিলভুক্ত হওয়ায় অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।

মামলায় ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য চিঠি দেয় দুদক।

এর আগে এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাগজে-কলমে বেশি কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খতিয়ে দেখতে ২৩ জুলাই তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)