বড় হামলার সক্ষমতা হারিয়েছে জেএমবি।

১৩ বছর আগে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের প্রায় সাড়ে ৪শ’ স্থানে বোমা ফাটিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দেয় জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। বিস্ফোরণের স্পটে নিজেদের লিফলেট রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে তারা। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মঘাতী হামলা, ব্লগার, অ্যাক্টিভিস্ট ও ধর্মীয় নেতাদের হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে বর্তমানে নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির সক্ষমতা অনেকাংশে গুড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

র‍্যাব-পুলিশ বলছে, বর্তমানে জেএমবির সদস্যরা বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে দেয়া হয়েছে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) বলছে, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবি কমপক্ষে ৪০টি বোমা হামলার ঘটনা ঘটায়। তবে আদর্শিক মতভেদ থাকায় এর কয়েক বছর পর জেএমবি থেকে অনেকেই নব্য জেএমবিসহ নানা জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে। আগের মতো শক্তি জানান দেয়ার অবস্থা তাদের নেই। পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারির কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে তাদের কার্যক্রম। অর্থায়নের উৎস বন্ধ ও গডফাদাররা জেলে ও শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিতেই কার্যত ভেঙে গেছে সংগঠনটির মেরুদণ্ড।

সিটিটিসি বলছে, মুফতি হান্নান, আতাউর রহমান সানি, শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলামের (বাংলা ভাই) মতো শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির পর কয়েক বছর ঝিমিয়ে ছিল জেএমবি। তবে ২০১৩ সাল থেকে ব্লগার হত্যাসহ বিশিষ্ট নাগরিক ও ব্যক্তিত্বকে হত্যা করা শুরু করে তারা। ২০১৬ সালে হলি আর্টিসানের জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবিরোধী চিরুনি অভিযান শুরু করে পুলিশ। প্রায় অর্ধশতাধিক অপারেশনের পর দেশের জঙ্গি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

পুলিশের সহকারী মহা-পরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা বলেন, বর্তমানে দেশের জঙ্গি পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। জেএমবি, নব্য-জেএমবির মাস্টারমাইন্ডদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে জঙ্গিদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা নেই, সিরিজ বোমা হামলার মতো সারাদেশে কিংবা দেশের কোথাও বড় ধরনের নাশকতা করার অবস্থা তাদের নেই। এমনকি তারা যাতে সংগঠিত হয়ে বিচ্ছিন্ন কোনো নাশকতা করতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেক জঙ্গি আইনের সুযোগ নিয়ে জামিনে বের হচ্ছে। এদের কেউ আত্মগোপনে যাচ্ছে, কেউ কেউ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে গেছে। তবে আমাদের বিশ্বাস জঙ্গিদের যেকোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা আমরা নস্যাৎ করতে পারবো।

র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জাগো নিউজকে বলেন, সিরিজ বোমা হামলার পর থেকে র‍্যাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সিরিজ অপারেশন চালাচ্ছে। অপারেশনে অনেক সক্রিয় জঙ্গি নিহত এবং গ্রেফতার হয়েছে। তাদের সক্ষমতা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তবে তাদের কর্মীসংগ্রহের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় তাদের সংগঠিত ও সক্রিয় হওয়ার তথ্য রয়েছে র‍্যাবের কাছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)