বিশ্বের বেশ জনপ্রিয় কিছু সিনেমা অথচ নিষিদ্ধ!
পৃথিবীর অনেক সিনেমাই আছে, যা পুরো বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। জনপ্রিয়তা, ব্যবসায়িক সাফল্য ও পুরস্কারে এগিয়েও রয়েছে এসব। কিন্তু কিছু কিছু কারণে সেই সিনেমাগুলোই নিষিদ্ধ হয়েছে কিছু কিছু দেশে।
আজ ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য রয়েছে এমনই কিছু সিনেমার গল্প, যেগুলো বেশ জনপ্রিয় অথচ নিষিদ্ধ। চলুন জেনে নেয়া এই তালিকায় থাকা ‘টপ টেন’ সিনেমা-
‘দ্য বার্থ অফ এ নেশন’ (১৯১৫):
সাইলেন্ট মুভি। কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের নাকি আক্রমণ করা হয় এটি দিয়ে। তাই মুক্তির পর নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় ‘দ্য বার্থ অফ এ নেশন’। ছবির পরিচালকও পরে স্বীকার করে নেন তার ভুল ছিল এতে।
‘অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ (১৯৩০):
প্রথম হিটলারই এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। জার্মানি, ও অস্ট্রিয়ায় ১২ বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিল এটি। এই ছবি দেখলে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর অত্যাচারের মুখে পড়তে হতো। এটি হিটলারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ওপর তৈরি একটি সিনেমা।
‘ক্লক ওয়ার্ক অরেঞ্জ’ (১৯৭১):
স্ট্যানলি কুবরিকের এই সিনেমা গ্রেট ব্রিটেনে ২৭ বছর ধরে অনুচিত ছিল। অত্যধিক মারামারি, পাশবিক ধর্ষণের চিত্র থাকায় এটিকে কোনভাবে ওইদেশে (ব্রিটেনে) দেখানোর অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে মার্কিন মুলুকে এটি বেশ প্রশংসা পায়।
‘দ্য লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস’ (১৯৭৩):
সাহসী ছবি এটি। ইরোটিক ড্রামা। একাধিকবার নায়িকার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখানো হয়েছে এতে। তাই ছবিটি ইতালি ও স্পেনে নিষিদ্ধ ছিল। সিনেমায় একটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছে নায়ক মার্লোন ব্র্যান্ডো সেক্সের সময় মাখন ব্যবহার করেছেন। ইতালি ও স্পেনের পক্ষ থেকে বলা হয় খাবার জিনিসকে এভাবেই দেখানোটা আসলেই আপত্তিকর।
‘সালো/হানড্রেড টোয়েন্টি ডেজ অফ সোডোম’ (১৯৭৫):
চার দুষ্কৃতি অপহরণ করে শিশু ও মহিলাদের। তারপর ওদের ওপর চলে অত্যাচার, যা দেখে গা চমকে ওঠবে। পাওলো পাসোলিনির এই সিনেমা ইরান, সিঙ্গাপুর সহ পাঁচটি দেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শিশুদের ওপর অত্যাচার, ধর্ষণের দৃশ্যগুলি থাকায় বিভিন্ন দেশে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করা হয়।
‘দ্য টিন ড্রাম’ (১৯৭৯):
অস্কারে বিদেশি সিনেমা বিভাগে সেরা পুরস্কার জেতে এই সিনেমা। এতে দেখানো হয় ১১ বছরের এক বালক ১৬ বছরের এক তরুণীর সঙ্গে সেক্স করছে।
এই কারনেই কানাডা ও ফিলাডেলফিয়াতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এটি। বলা হয় এই সিনেমা চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ছাড়া বেশি কিছু নয়। কিন্তু সিনে বিশেষজ্ঞরা এটিকে বড় নম্বর দিয়ে বলেছেন, ছবির বিষয়বস্তু ঠিকমত বুঝলে এটাকে নিষিদ্ধ করার কোন সুযোগ নেই।
‘ক্যানিবাল হলোকাস্ট (১৯৮০):
বিশ্বের ৪০টি দেশে নিষিদ্ধ ছিল এই ছবিটি। বহু দেশ বলেছেন, এটি দেখার পর অসুস্থ হয়েছেন অনেকে। ছবিটি একটা ফেক ডকুমেন্টারির ওপর তৈরি। যেখানে ক্যানিবালিজম, গণহত্যা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনকে অতি জঘন্যভাবে দেখানো হয়েছে।
‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার ট্রিলজি’ (১৯৮৫, ১৯৮৯, ১৯৯০):
টাইম ট্রাভেলের ওপর তৈরি হওয়া মজার একটি ছবি এটি। গল্পটি বেশ আনন্দেরও। কিন্তু চিনে এই ছবি নিষিদ্ধ করা হয়। কারণ এতে অনেক সময় ভবিষ্যতে যাওয়া হয়েছে। যা নাকি চিনের সরকারের নিয়মের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে এটিকে কুসংস্কারে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ জানানো হয়েছে। তাছাড়া এতে নাকি দেখানো হয়েছে বেইজিংয়ের থেকেও থাকার ভাল জায়গা রয়েছে, যা ওই দেশের সরকার বিরোধী।
‘থ্রি হানড্রেড’ (২০০৬):
যুদ্ধের ওপর তৈরি হওয়া হলিউডের অন্যতম সেরা ছবি এটি। তবে সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ করা হয় ইরান ও আরবের কিছু দেশে। তাছাড়া জাতিসংঘের কাছে এই সিনেমা নিয়ে অভিযোগও করেছেন ইরান। তারা বলেছে, তাদের দেশকে অপমান করতে এই সিনেমা তৈরি মার্কিনীদের একটা বড় চক্রান্ত।
‘দ্য সিম্পসন মুভি’ (২০০৭):
গোটা বিশ্বে বেশ উপভোগ্য ছিল এই কার্টুন সিনেমা। কিন্তু বার্মায় এক অদ্ভুত কারণে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এটিকে। ওই দেশে অভিযোগ করা হয়, সিনেমায় নাকি হলুদ রঙকে প্রচার করা হয়েছে। আর এই রঙ নাকি বার্মা সংস্কৃতির কাছে অপমানকর।
ছবির শ্যুটিংয়ে সত্যিকারের পশু হত্যা করা হয়েছে। ছবির পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অভিনেতা, অভিনেত্রীকেও নাকি সিনেমার সময় খুন করা হয়। অবশ্য সেটা পরে প্রমাণিত হয়নি।