দেবহাটায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে যুবককে অপহরণ

দেবহাটায় মোবাইল ফোনে প্রেম! প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে অপহরণ। নির্যাতনের ১০ঘন্টা পর মধ্য রাতে অপহৃত যুবককে চোখ ও হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর যুবকের ছিনতাই হওয়া পালসার মোটর সাইকেলটি আশাশুনি থানা পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বিকাল ৪টার দিকে বদরতলা টু ব্যাংদাহ সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে। জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লক্ষীদাড়ী গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৫) এক মাস পূর্বে দক্ষিণ পারুরিয়া গ্রামের শাহাজুল ইসলাম খোকনের কন্যা স্বপ্না খাতুন (২০) এর মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে গত শুক্রবার মনিরুল ও স্বপ্না দেবহাটার বিভিন্ন স্থানে প্রাইভেট কার যোগে ঘুরে বেড়ায়। এসময় স্বপ্নার বড় আপা পরিচয় দান কারী আরো দুইজন তাদের সাথে ছিলো। সারা দির বেড়ানো শেষে পরবর্তীতে পুনরায় বেড়ানোর সময় নির্ধারণ করা হয় সোমবার। যথাসময় মনিরুল স্বপ্নার সাথে দেখা করার জন্য দুপুরে বাড়ি থেকে রওনা হয়। এক পর্যায়ে পারুলিয়া গরুহাটে এসে পৌঁছালে বৃষ্টি শুরু হয়। সেখান থেকে মনিরুল স্বপ্নাকে ফোন করলে স্বপ্না জানায় আব্বা বাড়িতে আছে, কিছুক্ষণ পরে দেখা হবে। বর্ষা শেষে মনিরুল পারুলিয়াতে এসে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে। পরে স্বপ্না মোবাইল ফোনে মনিরুলকে বদরতলা টু ব্যাংদাহ সড়কে দেখা করার জন্য বলে। মনিরুল বিকাল ৪টার দিকে যথা স্থানে দেখা করতে গেলে কথা বলাবলির এক পর্যায়ে স্বপ্না কোন একজনের কাছে ফোন করে। একটু পরে একটি প্রাইভেট কার এসে ৫-৬ জন যুবক মনিরুলকে ধস্তা ধস্থি করে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত পালসার মোটর সাইকেলটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সে সময় স্বপ্না ও তার কথিত দুই বোন উপস্থিত ছিলেন। যুবকেরা প্রাইভেট কারের ভিতরে মনিরুলের হাত, পা ও চোঁখ বেধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে। এসময় মনিরুলকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারত্বক জখম করে এবং পায়ের নখ প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলে অচেতন অবস্থায় হাত, পা ও চোঁখ বাধা অবস্থায় রাত দুইটার দিকে কুলিয়া সিদ্ধেশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ফেলে চলে যায়। ঐ রাতে পুলিশ আহত অবস্থায় মনিরুলকে উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এব্যাপারে স্বপ্না জানান, আমি আগে মনিরুলকে চিনতাম না। আমার পাতানো ভাই শাঁখরা বাজারের মারিয়া জুয়েলার্সের মালিক আবু হাসান (হৃদয়) মনিরুলকে ফাঁসানোর জন্য তার মোবাইল কথা বলতে বলে। আমি হাসানের কথা মতো মনিরুলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে কথা বলি। ঘটনার দিন নির্দিষ্ট সময় হাসানের কথা মত বদরতলা টু ব্যাংদাহ সড়কে ডেকে নিয়ে যাই। তারপর হাসান ভাইয়ের লোক প্রাইভেটে এসে মনিরুলকে ঘটনাস্থল থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। তার পর যে কি হয়েছে আমি জানি না। এব্যাপারে মারিয়া জুয়েলার্সের মালিক আবু হাসান জানান, স্বপ্না সম্পর্কে আমার পাতানো বোন। আমি দীর্ঘদিন তাদের পরিবারের সাথে ওঠা বসা করি। সাতক্ষীরা নাজমুল স্মরণীস্থ জেডি জুয়েলার্সের মালিক পিন্টু দাদা মনিরুলের কাছে টাকা পাবে তাই আমার পাতানো বোন স্বপ্নাকে দিয়ে মনিরুলকে ফোন করিয়ে দেখা করতে বলি। এসময় পিন্টু দাদার লোক প্রাইভেটকার যোগে মনিরুলকে উঠায়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আর কিছু জানি না। জেডি জুয়েলার্সের মালিক পিন্টু সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার দোকানের কর্মচারীকে দিয়ে ফোন রিসিভ করায়। এবিষয়ে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মান্নান আলী জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)