কলারোয়ায় আপত্তিকর অবস্থায় জনতার কব্জায় ছাত্রলীগ নেতা সালাম!

বহু বিতর্কিত, বহু নারী কেলেঙ্কারীর হোতা কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আবারও গৃহবধূর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় জনতার হাতে আটক। তবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে জনতার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় আর এক ছাত্রলীগ নেতা জর্জ। এয়াড়া ৯০ হাজার টাকায় রফাদফার মাধ্যমে বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা ও গৃহবধূর স্বামী। এদিকে আব্দুস সালাম আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা মুখরোচক সংবাদে পরিণত হয়।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌর সদরের শ্রীপতিপুর মোড়ের ইতালী ভবনে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালামের সাথে ইতালী টালী কারখানার ম্যানেজার আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী জেসমিন খাতুনের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক চলছিল। সেই সুবাদে ইতালী ভবনে যাতায়াত করতেন নারী খাদক আব্দুস সালাম। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন ভাল ভাবে মেনে নিতে না পারায় তাদেরকে হাতে নাতে ধরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন বহুদিন ধরে।

সেই মোতাবেক শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে স্থানীয়রা জুম্মার নামাজে যাওয়ার সুযোগে নারী খাদক আব্দুস সালাম মটর সাইকেল যোগে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর ইতালী টালী কারখানার ম্যানেজারের স্ত্রী জেসমিনের রুমে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক চলাকালে স্থানীয়রা আপত্তিকর অবস্থায় তাদেরকে আটক করে। এরপর উত্তম মধ্যম দেয়া শুরু করে।

খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল খান জর্জ ও তাতীলীগ নেতা রিপন। তারা আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী জেসমিনকে ভয়ভীতি দেখায়। এর পরপরই কলারোয়া থানার দুই এএসআই আব্দুল হালিম ও ইসাহক আলী। এরপর গৃহবধূর স্বামী আব্দুস সাত্তারকে পুলিশের হুমকি দিয়ে  ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতা জর্র্জ ও তাঁতীলীগ নেতা রিপন ।  এরপর পুলিশের দুই এএসআই এর সহায়তায় ছাত্রলীগ নেতা জর্জ সালামকে উদ্ধার করে অন্যস্থানে নিয়ে যায়। তবে বিষয়টি জানার সাথে সাথে কলারোয়া থানার সদ্য যোগদানকৃত  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ আহম্মেদ ঘটনার তদন্তে এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনকে ঘটনা স্থলে পাঠান।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল খান জর্জ বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা সেখানে যায়। এরপর সেখানে যেয়ে ঘটনার কোন সত্যতা না পেয়ে আমরা সালামকে নিয়ে চলে আসি। সেখানে টাকা নেওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। এখানে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ছাত্রৈলীগের ভাবমূর্তী নষ্ট করার পায়তারা চালাচ্ছে। সালাম তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কলারোয়া থানার এএসআই আব্দুল হালিম বলেন, ঘটনা জানতে পেরেই আমরা দুইজন সেখানে যায়। সেখানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জর্জসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তারপর জর্জ আমাদেরকে বলেন ‘ভাই আপনারা চলে যান। ঘটনা একটা ঘটে গেছে তবে আমরা নিজেরাই এটির মিমাংসা করে নেবো।’ আপনারাতো জানেন কলারোয়ায় মুখোমুখি দুইটি গ্রুপ। পরে যদি কিছু হয় এজন্য আমরা ওখান থেকে চলে এসেছিলাম।

ওসিকে বিষয়টি জানিয়ে ওখানে গিয়েছিলেন কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না আমরা ওসি স্যারকে জানিয়ে যায় নি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলারোয়া থানা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, আজকের ঘটনা সত্য। জনগন সালামকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে ব্যাপক মারপিট করেছে। এর আগেও নারী কেলেঙ্কারির কারণে তার নামে মামলাও হয়। সে কারণে তাকে কলারোয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হতে বহিস্কার করা হয়। তার কারণে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তী চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা উচিৎ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলারোয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে আমি ইটালী ভবনে যায়। এরপর কারো না পেয়ে ইটালী ভবনের ম্যানেজার সাত্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার এক আত্মীয় এখানে বেড়াতে এসেছিল। স্থানীয়রা তাকে আটক করে। পরে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে তাকে নিয়ে যায়। এরপর আমি তাদেরকে অনেক খোঁজাখুজি করেছি তবে তাদের সন্ধান পায়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম আবু সাঈদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ব্যক্তির দায় কখনো সংগঠন নেবে না। তবে ছাত্রলীগের পদে থেকে যদি কোন নেতাকর্মী এমন বাজে কাজ করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)