১১৯তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু করছে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশ্বে ১১৯তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু করছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, ২০১০ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় প্রবর্তিত হয়েছিল মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি)। কিন্তু এই পাসপোর্টেও জালিয়াতি হচ্ছে বিধায় ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনাকে আরো নির্ভুল, সহজতর ও সময় সাশ্রয়ী করতে বিশ্বের ১১৮টি দেশ ইতিমধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান করেছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ই-পাসপোর্ট চালু করতে জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির সঙ্গে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জিটুজি’র ভিত্তিতে টার্ন কি পদ্ধতিতে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে থেমে নেই বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বাংলাদেশি নাগরিকদের দেয়া হয়েছে এবং ১১ লাখেরও বেশি মেশিন রিডেবল ভিসা বিদেশিদের দেয়া হয়েছে। তবে এমআরপি পাসপোর্ট এখন বন্ধ হয়ে যাবে না। ই-পাসপোর্ট সম্পূর্ণরুপে চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি চালু থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের এ দেশে থাকার সুযোগ দিয়ে মাদার অব হিউম্যানিটি আখ্যা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিশে যেতে না পারে তাই এই অধিদফরটি সফলতা দেখিয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের ইলেকট্রনিক নিবন্ধনের কাজটিও সম্পাদন করেছে।

জার্মানির পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (state minister) নেইলস আনেন বলেন, খুব অল্প সময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর অগ্রগতি অর্জন করছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জার্মানি কোম্পানির সহায়তায় বাংলাদেশ তার চ্যালেঞ্জের পক্ষে আরো এগিয়ে যাচ্ছে। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এর আগেও আছে। আর আমরা বাংলাদেশিদের এ কাজে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবো।

ই-পাসপোর্ট চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ভেরিডোস কোম্পানির সিইও কুনসসহ অনেকে। এছাড়াও পাসপোর্ট অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে জানানো হয়, জার্মানের ভেরিডোস কোম্পানি ৩ কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। ঢাকার উত্তরায় বুকলেটের জন্য একটি অ্যাসেম্বলি কারখানা স্থাপন করা হবে। এতে বুকলেটের খরচ অর্ধেকেরও কম হবে। ৫০টি ই-গেট দেওয়া হবে। সব সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ সেবা প্রদান করবে। একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটা সেন্টার ও একটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে। পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে ৮টি প্রিন্টিং মেশিন থাকবে এবং যার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রতি শিফটে ৩০ হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট প্রিন্ট করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশে ৭২ টি পাসপোর্ট অফিস, বিদেশে ৮০ টি মিশন, ৭২ টি এসবি/ডিএসবি অফিস, ২২টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ সকল অফিসে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক প্রদান করবে। এই প্রকল্পের আওতায় ১০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে জার্মানে ২ সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)