তালায় ৩৭ শিক্ষকের কাছ থেকে ৭ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়েছে শিক্ষক নেতারা

সাতক্ষীরা তালার ৩৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দ্রুত উন্নতি স্কেলে বেতন পাইয়ে দেয়ার নাম করে স্বঘোষিত শিক্ষক নেতা স্বপন কুমার মিত্রসহ কতিপয় শিক্ষক নেতা ৭ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষা অফিস থেকে শুরু তালা উপজেলা ব্যাপী উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানাগেছে, বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ৬৭টি পুরাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের উন্নতি স্কেলে বেতন প্রদান করা হবে। পুরাতন এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতি মাসের বেতন-ভাতার সাথে অতিরিক্ত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বেশী পাবেন। সে হিসেবে প্রত্যেকেই বেতন-ভাতার সাথে উন্নতি স্কেলে আরো ৩ লক্ষাধিক টাকা পাবেন। এই সুযোগে তালা উপজেলার স্বঘোষিত শিক্ষক নেতা নুরুল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মিত্রসহ কতিপয় শিক্ষক নেতা ৩৭ জন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে কৌশলে কাগজ পত্র ঠিক করে দ্রুত বেতন পাইয়ে দেয়ার নামে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা করে মোট ৭ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাকি ৩০জন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকেও অনুরুপ টাকা হাতিয়ে নেবার চেষ্টা চলছে।

এই সিন্ডিকেটটি প্রথম পর্যায়ে ৩৭জন প্রধান শিক্ষককে জিম্মি করে এই টাকা আদায় করেছেন। দ্রুত উন্নতি স্কেলের টাকা পাইয়ে দেয়া হবে বলে তারা এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ৩৭ জন শিক্ষকের প্রত্যেকেই অতিরিক্ত ৩ লক্ষাধিক টাকা সহজে পাবার আশায় এই সিন্ডিকেটকে টাকা দিতে বাধ্য হন। কিন্তু টাকা দেয়ার এক মাস পার হয়ে গেলেও শিক্ষকরা তাদের উন্নতি স্কেলের টাকা না পাওয়ায় ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, সরকারি বিধি মোতাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সকল প্রধান শিক্ষকদের প্রাপ্ত উন্নতি স্কেল অনুযায়ী সার্ভিস বই সম্পাদন করবে। কিন্তু উন্নতি স্কেল প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সার্ভিস বই অফিস কর্তৃপক্ষ এখনও লিপিবদ্ধ বা সম্পাদন করেননি। আলোচিত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মিত্র নিজেই উন্নতি স্কেল প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সার্ভিস বইতে বেতন ফিক্সেশন সমন্বয় করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষক জানান, স্বপন কুমার মিত্র বিভিন্ন সময়ে নিজ স্কুলে পাঠদান থেকে বিরত রেখে উপজেলা শিক্ষা অফিসে এসে নানা-হুমকি-ধামকি দিয়ে পর্যায়ক্রমে ৩৭জন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জন প্রতি ২০ হাজা টাকা করে মোট ৭ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার অদৃশ্য ক্ষমতার ভয়ে সাধারণ শিক্ষকরা মুখ খুলতে সাহস পাননা বলে জানা গেছে।

আলোচিত এসব ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে শিক্ষক স্বপন কুমার মিত্র জানান, আমি কোনও শিক্ষক সমিতির নেতা না। আমি কারো কাছ থেকে এ ধরনের কোনও টাকা নেয়নি এবং এ ব্যপারে কিছুই জানিনা। আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য নানান ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে।

এ ব্যপারে তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলাম জানান, উন্নতি স্কেলে ভেতন-ভাতাদির বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে কয়েকজন শিক্ষক মৌখিক ভাবে আমার নিকট অভিযোগটি জানিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)