আশাশুনির গোদাড়া দাখিল মাদরাসায় বর্ষার পানিতে ভিজতে ভিজতে ক্লাস
আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া আল-মাদানি দাখিল মাদরাসা নানাবিধ সমস্যা জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে। টিনের ছাউনি ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে ভিজতে ভিজতে ক্লাস বসে থাকে। ২৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসাটির করুন দশার ইতি ঘটবে কবে ? এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষ ১৯৯১ সালে ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন বাঁশের খুঁটির উপর চাল লাগিয়ে ক্লাস শুরু করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে এলাকাবাসীর অর্থে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেড ঘর নির্মাণ করা হয়। কক্ষ সংকট ও মাদরাসার পরিবেশ ভালো করতে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য মৃত আলহাজ¦ আঃ ছাত্তার সরদার ৬ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বি-তল ভবন নির্মাণ করেন ২০০৬ সালে। পাকা ঘর নির্মাণ করা হলেও দুর্গতির শেষ হয়নি, বরং পুরনো টিনসেড ঘরের ছাউনির টিনে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। বড় বড় ছিদ্র দিয়ে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ভিতরে ঢোকায় ক্লাস পরিচালনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বছরের একটি বড় সময় মাদরাসাটির ক্লাস বন্দ হয়ে যায়। এছাড়া দেওয়ালের প্লাস্টার খসে খসে পড়ে থাকে। ৫ কক্ষের মধ্যে ২টি কক্ষ সম্পূর্ণ ভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, দীর্ঘ ২৭ বছরের পুরাতন মাদরাসাটি সরকারি বা বেসরকারি কোন সহায়তায় সংস্কার বা নতুন ঘর নির্মাণের সুযোগ পায়নি। এছাড়া ৩১২ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পরিচালিত মাদরাসায় সুপেয় পানির অভাব, ৪টি ল্যাট্রিনের মধ্যে ২ জরাজীর্ণ হয়ে পড়া, সীমানা প্রাচীর না থাকা, বর্ষায় মাদরাসা মাঠ তলিয়ে থাকা এবং মাদরাসায় যাতয়াতের জন্য পর্যাপ্ত পথের অভাব মাদরাসার ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য চরম কষ্টকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এতকিছুর পরও মাদরাসার বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষ জনক রয়েছে। দাখিল পরীক্ষায় ২০১৬ সালে ৩৯ জন অংশ নিয়ে ১০০%, ২০১৭ সালে ৩২ জনের মধ্যে ৩১ জন ও ২০১৮ সালে ৫৪ জনের মধ্যে ৪৮ জন কৃতকার্য হয়েছে। জেডিসি পরীক্ষায় ২০১৫ সালে ৬৮ জনের মধ্যে ৬৭ জন, ২০১৬ সালে ৪৬ জন অংশ নিয়ে ১০০%, ২০১৭ সালে ৫৩ জন অংশ নিয়ে ১০০% কৃতকার্য হয়েছে। ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসীর দাবী, মাদরাসাটির শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর করতে টিনসেড ঘরটি পুনঃনির্মাণ করা, মাঠ ভরাট, প্রাচীর নির্মাণ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা কার্যকর করা এবং যাতয়াতের পথ সুপরিসর করা হোক। প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুদীর্ঘ সময়ে সরকারি অর্থ বরাদ্দ ও বেসরকারি বা স্থানীয় সরকার বিভাগের সহায়তা বি ত থাকার বিষয়টি মানুষের মনে চরম কষ্টের জন্ম দিয়েছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।