আশাশুনির বৃহত্তর পুরাতন মোকাম বড়দল বাজারের ব্যবসায়ীরা নানাবিধ সমস্যায় ভুগছে

আশাশুনি উপজেলার বৃহত্তর পুরাতন মোকাম বড়দল বাজারের ব্যবসায়ীরা নানাবিধ সমস্যা বুকে ধারণ করে কষ্টকর পরিবেশে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে পুরতান ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।
দক্ষিণ খুলনার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মোকাম বড়দল বাজার। বাজারটিতে প্রায় সাড়ে ৪ শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বহু এনজিও, বীমা অফিস, কলেজ, স্কুল, মাদরাসা এবং ধনী শ্রেণি মানুষের বসবাস। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খর¯্রােতা কপোতাক্ষ ও মরিচ্চাপ নদী এখন নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে এলাকার সকল বাজারের ব্যবাসীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখন এখানে সহজে ভিড়তে পারছেনা। তবে সড়ক পথে যতটুকু সম্ভব ব্যবসায়ীদের যাতয়াত অটুট রয়েছে। প্রতিদিন বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাটের দিনে এখানে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে। অনেকগুলো দুঃখের মধ্যে অন্যতম দুঃখ বাজারটিতে কোন ব্যাংকের শাখা না থাকা। বড়দল, কাদাকাটি, খাজরা, আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও দরগাহপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এলাকায় কোন ব্যাংকের শাখা না থাকায় অর্থ লেনদেন নিয়ে খুবই সমস্যায় রয়েছেন। এসব এলাকার মানুষকে দুরবর্তী আশাশুনি, গুনাকরকাটি বা বুধহাটা বাজারে অবস্থিত ব্যাংকে লেনদেন করতে হয়। যা অসম্ভব বললেও ভুল হবেনা। অনেকে ঝক্কি-ঝামেলা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে ঐসব ব্যাংকে লেনদেন করে থাকেন। সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক, বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীভাতাসহ বিভিন্ন ভাতাভোগিরা ১০ থেকে ৩০/৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তাদের ভাতার টাকা উঠাতে ঐ সব ব্যাংকে যেতে বাধ্য হয়ে থাকেন। যেটি দুরূহ ও ব্যয়বহুল। বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের শাখার অভাবে ব্যবসায়িক টাকা লেনেদেনে চরম বিপাকে রয়েছেন। এলাকার মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে না পেরে বিপদ সংকুল জীবন যাপন করছেন। এনিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখলেখি, বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। এমনকি বাজারে কৃষি ব্যাংকের শাখা স্থাপনের দাবীতে বড়দল মেইন সড়কে মানববন্ধন কমূসূচি পালন করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আঃ আলিম মোল্যা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার লিয়াকত আলি, গ্রামীন ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম, উন্নয়ন প্রচেষ্টার ম্যানেজার শফিয়ার রহমান, আশা ম্যানেজার শিবপদ চক্রবর্তী, ইউপি সদস্য, ব্যবাসায়ীবৃন্দ, বাজার কমিটির সেক্রেটারী কাজল, বড়দল প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। এলাকাবাসীসহ সকল প্রতিষ্ঠানের মানুষের প্রাণের দাবী অবিলম্বে বড়দল বাজারে কৃষি ব্যাংকের একটি শাখা স্থাপনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দুঃখ ও দুর্গতি লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এছাড়া বাজারের চাদনী সেটের ছাউনি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পনিতে ব্যবসা বন্দ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মাছ ও মাংসের সেট, চানদী সেটের পাশে মাছ ও মাংসের পট্টি ও কাপড় পট্টি পানিতে তলিয়ে থাকায় হাটু পানি ও কাদামাটিতে কষ্টকর পরিবেশে ক্রেতারা বাজাওে যেতে বাধ্য হন। মনোহরী ও কাচামাল পট্টি নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। ব্যবসাীরা তাদের ব্যবসার দোকান বসিয়ে থাকেন খুটির উপর গোলপাতার ছাউনি দিয়ে। আধাপাকা কিংবা পাকা ঘর নির্মান করতে গেলেই চাঁদাবাজী ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে হয়ে ওঠে না। ফলে বাজারটি এখন ছোবড়া ঘরের বাজাওে পরিণত হতে চলেছে। পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় পুরা বাজারটি পানি ও কাদামাটিতে চরম বিপদাপন্ন হয়ে উঠেছে। চাঁদনী সেট, অভ্যান্তরিন সড়ক নির্মান, পয়ঃ নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা, ওয়াপদা বাঁধে পাইপের মাধ্যমে পানি উঠানামা করায় জোয়ারের পানিতে বাজার ছয়লাব হয়ে যাচ্ছে, সেখানে একটি পাট সম্বলিত কালভার্ট নির্মান করা। এবং নদীগুলো পুনঃ খনন না করায় নৌপথ রুদ্ধসহ নানাবিধ সমস্যা দীর্ঘকালের। এসব সমস্যা নিরসনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)