ভিড় বেড়েছে দ্বিতীয় দিনে

ডেস্ক রিপোর্ট :

ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা ছাড়বেন রাজধানীবাসী। নাড়ির টানে পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষ ছুটবে ঈদ উদযাপনে- এটাই রীতি। শুরু হবে নাড়ির টানে ঘরে ফেরার সব চেষ্টা। আনন্দের ঈদ যাত্রায় পদে পদে ভোগান্তি, শত বিড়াম্বনা তবুও নানা সমস্যা উপেক্ষা করে ঘরে ফেরারতেই যেন সব আনন্দ-স্বস্তি আর ভালো লাগা।

আর এমনই এক ভালো লাগার ঈদ যাত্রায় আগামী ১০ জুনের কাঙ্খিত গন্তব্যে যাওয়ার ট্রেনের টিকিট শুক্রবার সংগ্রহ করেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা। আর এর চেয়েও ১১ জুনের টিকিটের চাহিদা যেন আরও বেশি। আজ (শনিবার) দেয়া হচ্ছে ১১ জুনের টিকিট – ওইদিনের টিকিট সংগ্রহ করতে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতির এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও দীর্ঘ হয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন।

মোট ২৬টি টিকিট কাউন্টারের প্রতিটির সামনেই টিকিট প্রত্যাশীদের রয়েছে দীর্ঘ সারি। যা কাউন্টারের সামনে থেকে একদম পিছনের দিক হয়ে এঁকেবেঁকে মানুষের লাইন চলে গেছে বাইরে। এই সারিতে যোগ দিতে অনেকেই এসেছেন মধ্যে রাতে, আবার অনেকে সেহরির পরে এসে নিজেকে যুক্ত করেছেন এই সারিতে। অনেকে বক্সে খাবার এনে এখানেই সেরে নিয়েছেন সেহরি।

আবার অনেকে দীর্ঘ সময় পাশের মানুষগুলোর সঙ্গে গল্প করে, পত্রিকা বিছিয়ে অথবা তাস খেলে সময় কাটিয়েছেন। সময় কাটানোর সেই ক্ষণগুলোতেও প্রতিনিয়ত লাইনে যুক্ত হয়েছেন নতুন করে আসা টিকিট প্রত্যাশীরা। ফলে ধীরে ধীরে আরও দীর্ঘ হয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের সারি। সবার তখনও অপেক্ষা কখন বাঁজবে ৮টা। কারণ ওই সময় থেকে স্টেশনের ২৬টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

মাইনুল ইসলাম, পেশায় একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। সেই মধ্যে রাতে টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি, নেবেন ১১ জুনের রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। যে কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সেই কাঙ্খিত টিকিটের অপেক্ষায় আছেন। টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছাতে তখনও ৫০/৬০ জনের পিছনে অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।

এমনই পরিস্থিতিতেই এ প্রতিবেদকের আলাপ হয় তার সঙ্গে। মাইনুল ইসলাম বলেন, সেই মধ্যে রাতে লাইনে দাঁড়িয়েছি, আজ টিকিট প্রত্যাশীদের যে ভিড় এতে করে মনে হয় বেশিরভাগ জনই টিকিট পাবে না। সকাল ৮ টায় টিকিট বিক্রি শুরু হলেও খুব ধীর গতিতে টিকিট দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান তিনি।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য শহীদ আক্তার জানান, শুক্রবারের তুলনায় আজ (শনিবার) টিকিট প্রত্যাশীদের সংখ্যা অনেক বেশি। যত মানুষ আছে অতো টিকিট নেই, আজ হয়তোবা অনেকেই টিকিট না পেয়ে ফিরে যেতে হবে।

গতকালের পর আজ আবার টিকিট প্রত্যাশীদের লাইনে দাঁড়িয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবি রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও পরে শোনা গেল এসি বার্থ শেষ, তাই আজ আবার এসেছি। আমার অসুস্থ স্ত্রী, ছোট বাচ্চা নিয়ে এসি বার্থ ছাড়া যাওয়া সম্ভব নয়। তবে আজও যে ভিড় মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ পরই টিকিট শেষ হয়ে যাবে। গতকাল সকাল সকালেই এসির টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছিল।

এমন অভিযোগের বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘আসলে ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চায়, কিন্তু সেগুলোর তো লিমিটেশন আছে। তিনি যে স্টেশনের জন্য চেয়েছেন সেখানের বরাদ্দকৃত এসি টিকিট হয়তো শেষ হয়ে গেছে যে কারণে তিনি পাননি।’

তিনি বলেন, ‘সকাল ৮ টাকা থেকে বিরতিহীনভাবে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন, বরাদ্দকৃত টিকিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে টিকিট বিক্রি চলবে।এবার টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা বাড়িয়ে ২৬টি করা হয়েছ। শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছেন।’

উল্লেখ্য, ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল থেকে, যা চলবে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত। আজ দেয়া হচ্ছে ১১ জুনের অগ্রিম টিকিট। ৩ জুন দেয়া হবে ১২ জুনের টিকিট, ৪ জুন ১৩ জুনের টিকিট, ৫ জুন ১৪ জুনের টিকিট এবং ৬ জুন ১৫ জুনের টিকিট।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। একজন একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)