ধরলে ভালো করেই ধরি, নিরীহ কেউ শিকার হলে ব্যবস্থা

ডেস্ক রিপোর্ট:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কার ভাই, কে কার চাচা আমি তা দেখি না। আমি যখন ধরি ভালো করেই ধরি। কে গডফাদার, কে ডন সেটা দেখার অবকাশ নেই। প্রভাবশালী হোক, গডফাদার হোক কেউ ছাড় পাবে না। অযথা কেউ শিকার হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বুধবার গণভবনে ভারত সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মাদকবিরোধী অভিযান হঠাৎই শুরু হয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য নিয়ে নজরদারি চালিয়ে এরপরই অভিযান চালানো হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাদক সমাজের একটা ব্যাধি, আপনারাই লিখেছেন এটা। আপনারা কি চান অভিযান চলুক, না কি বন্ধ হয়ে যাক?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব স্বাভাবিক যে এই ধরনের অভিযান চালাতে গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটে। মাদকবিরোধী এই অভিযানের নিরাপরাধ কেউ শিকার হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যে কয়টা ঘটনা ঘটেছে, মনে হয় না তেমন কোনো নিরীহ ব্যক্তি শিকার হয়েছে।

গণমাধ্যমে গ্রেফতারের ঘটনাগুলোকে বাদ দিয়ে শুধু নিহতের সংখ্যাকেই সামনে আনা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযানে এই পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, ভারত সফরে তিস্তা চুক্তিসহ অমীমাংসিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন নদী কমিশনের বৈঠকে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তার বিকল্প না তিস্তা সেটা তাদের আলোচনার বিষয়। আমরা পানি চাই। এ জন্য যা করার তা সবই করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিদান চাই না। আমি দেই, যা দিয়েছি তার প্রতিদান কখনো চাই না। শেখ হাসিনা বলেন, আমার নেয়ার অভ্যাস কম। দেয়ার অভ্যাস বেশি। ভারতকে যা দিয়েছি আজীবন মনে রাখবে। অস্ত্র, চোরাচালান ও সন্ত্রাস বন্ধসহ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে অনেক সমস্যা থাকতে পারে। সেসব সমাধানে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু বার বার তা তুলে ধরে তিক্ততা তৈরির পক্ষে আমি নই।

পানি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরেই কেনো পানির ব্যবস্থা করবো না। আর সে কারণে নদীগুলো ড্রেজিং করা হচ্ছে। কয়েক হাজার পুকুর খনন করে জলাধার সংরক্ষণের চেষ্টা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকের জন্য বীমা নিয়ে বেশ কয়েকবার ভাবা হয়েছে। তবে তা এখনো যুতসই করা যায়নি। বরং আমরা কৃষকের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছি।

আরেক এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে, নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে- স্বাধীন কমিশন গঠন করে দেয়া হয়েছে, তারাই ঠিক করবে।

২৫ মে দু’দিনের সরকারি সফরে কলকাতা যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন করেন। এ সময় দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ভবনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন।

এ সফরে শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও বৈঠক করেন। শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা তার এ সফরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’ এবং কলকাতায় ঐতিহাসিক ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’ জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

২৬ মে রাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা এবং সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)