মোস্তাফিজকে ছাড়াই টাইগারদের ভারত-যাত্রা

অনলাইন ডেস্ক :

২৬ মে শেরে বাংলায় সর্বশেষ দিবা-রাত্রির ম্যাচ কন্ডিশনে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছেন ক্রিকেটাররা। দেরাদুন যাবার আগে সেটাই ছিল জাতীয় দলের শেষ অনুশীলন। তারপর ২৭ আর ২৮ মে দুদিন ছিল বিরতি। ঘুরিয়ে বললে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত গোছগাছ তথা প্রস্তুতির পাশাপাশি আপনজনের সাথে দেখা-সাক্ষাত পর্ব শেষ করার জন্য। ২৯ মে সকাল ১০ টায় দিল্লির ফ্লাইট (ঢাকা থেকে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই, তাই জাতীয় দলের বহর দিল্লি হয়ে দেরাদুন যাবে)।

এমন অবস্থায় অাগের দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইফতার মাহফিলেও যোগদান করেন ক্রিকেটাররা। রাতে হঠাৎ মোস্তাফিজের অভিযোগ, আমার বাঁ পায়ের টো’তে (পায়ের সামনের অংশ) ব্যথা। কি আর করা? অত রাতে তো আর ফিজিও-ট্রেনারের শরনাপন্ন হবার সময় ছিল না। অগত্যা তাকে এক্স-রের জন্য পাঠানো। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে আসতে রাত ১১ টা বেজে গেছে। সেই রিপোর্টেই জানা হলো, মোস্তাফিজের বাঁ পায়ের অগ্রভাগে সমস্যা। তার পক্ষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা সম্ভব না।

সোমবার রাত ১১ টা ৫১ মিনিটে বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামের টেক্সট, ‘মোস্তাফিজ দলের সাথে দেরাদুন যেতে পারছেন না। তার বাঁ পায়ের অগ্রভাগে সমস্যা। যা আজ রাতে এক্স-রেতে ধরা পরেছে।’ এই খবরে রীতিমত চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।

এদিকে সকাল ১০ টায় যেহেতু ফ্লাইট, তাই সাত সকালে বিমান বন্দরে পৌঁছে যায় জাতীয় দলের বহর। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে ফোন, কাল সোমবার তো কোনো প্র্যাকটিস ম্যাচ বা প্র্যাকটিস সেশনও ছিল না। তাহলে হঠাৎ কি এমন হলো যে মোস্তাফিজ ব্যথা পেয়ে গেলো? এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ইনজুরিতে, টিম ম্যানেজমেন্ট, ফিজিও-ট্রেনার আর ম্যানেজারের কেউই জানবে না, তা কি করে সম্ভব?

এমন এক গাদা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের ছোট্ট জবাব, ‘ও তো (মোস্তাফিজ) ২৬ মে শেষ প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলেছে। কই তখন তো অামরা কোনো সমস্যা দেখিনি। সে নিজেও কিছু বলেনি। তাই আমাদের মাথায়ই আসেনি মোস্তাফিজের ইনজুরির কথা।’

ম্যানেজার ক্ষোভ ঝারলেন মোস্তাফিজের ওপরই। এমন একটা ভাইটাল প্লেয়ার, আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে খেলে ঝানু হয়ে গেছে। এসব ইনজুরির বিষয়গুলো আগে ভাগে খেয়াল করবে না! আরও দায়িত্ব সচেতন হওয়াতো জরুরী।

ম্যানেজার তার অবস্থান থেকে হয়তো ঠিকই বলেছেন। যেহেতু আইপিএল খেলে দেশে ফেরার পরও মোস্তাফিজ জাতীয় দলের প্র্যাকটিসে যোগ দিয়েছেন। শেষ প্র্যাকটিস সেশনেও অংশ নিয়েছেন। তখন কোনো সমস্যা বা ব্যথা অনুভব করেননি। কিংবা করলেও হয়তো আমলে আনেননি। ভেবেছেন ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, জাতীয় দলের ফিজিও কি করেছেন? তার তো জানার কথা। অনেক টাকায় কোচিং স্টাফ, ট্রেনার-ফিজিও রাখা হয়েছে। তারা যদি কোনো ক্রিকেটারের সর্বশেষ অবস্থা কি, তা না-ই জানবেন, খুঁটিনাটি খোঁজ-খবর নাই রাখবেন, তাহলে বিপুল অর্থ ব্যয়ে এসব ফিজিও রাখার প্রয়োজনীয়তাই বা কি?

এদিকে মোস্তাফিজের মত নির্ভরযোগ্য পেসারের বিকল্প আসলে নেই। তাৎক্ষণিকভাবে টিম ম্যানেজমেন্ট বিকল্প চূড়ান্ত করতেও পারেনি। আজ সকালে বিমানবন্দরে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি, মোস্তাফিজের জায়গায় কে যাবেন।

তিনি আবুল হাসান রাজু আর শফিউল ইসলামের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে রাজুর সম্ভাবনা বেশি।’ তার মানে আগের রাতে মোস্তাফিজের ইনজুরির খবর জানার পরে আজ সকালে তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প চূড়ান্ত হয়নি। ১৫ জনের বদলে ১৪ জন নিয়েই ভারতের দেরাদুনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে জাতীয় দল। হয়তো আজ রাজুর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে তার দেরাদুন যেতে যেতে হয়তো আগামীকাল বুধবার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)