বঙ্গবন্ধু ভবনও করতে চাই: মমতা

ডেস্ক ‍রিপোর্ট:

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমরা বঙ্গবন্ধু ভবনও করতে চাই।

কলকাতায় বিশ্বভারতী `বাংলাদেশ ভবন` উদ্বোধনের পর এক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মমতা বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক শুরু হয়েছে। এই বন্ধুত্ব কখনো শেষ হবে না। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক পদ্মা মেঘনা যমুনার মতো, অবিরল অবিচল। এই সম্পর্ক অনেকদূর গড়াবে।

তিনি আরো বলেন, এই ভবনটা একসময় তীর্থস্থানে পরিণত হবে। দুই দেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে বিশ্বভারতী কাজ করেছে। আমরা ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু ভবন করতে চাই। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের সবাইকে রমজান ও ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান।

এর আগে কলকাতায় বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে এক মঞ্চে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমবর্তনের পর বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করা হয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এই ভবনে রয়েছে ৪৫০ আসনের প্রেক্ষাগৃহ, যা বিশ্বভারতীতে থাকা প্রেক্ষাগৃহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়।

আরো জানা গেছে, নবনির্মিত এই ভবনে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসভিত্তিক সংগ্রহশালার পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের গ্রন্থের সংগ্রহ নিয়ে একটি পাঠাগারও তৈরি করা হয়েছে।

এ ছাড়াও ভবনটির প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে।

এর আগে ভারতের প্রধানমন্দ্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শুক্রবার সকাল আটটা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, তিন বাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

শান্তি নিকেতনের অনুষ্ঠান শেষে হেলিকপ্টারে কলকতায় ফিরে হোটেল তাজ বেঙ্গলে উঠবেন শেখ হাসিনা। সফরের সময় এই হোটেলেই অবস্থান করবেন তিনি।

এরপর রাত আটটায় পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার সকাল ১১টায় পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি গ্রহণ করবেন শেখ হাসিনা।

একই দিন বিকেল চারটা ২০ মিনিটে নেতাজী জাদুঘর পরিদর্শন (নেতাজী ভবন) করবেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় স্থানীয় এমপিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই রাতেই দেশের উদ্দেশে রওনা হয়ে রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরে তিস্তার পানিবণ্টনসহ দু’দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। তার আমলে দু’দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হলেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে চুক্তি হয়নি তখন।

২০১৭ সালে ফিরতি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত যান। ওই সময়েও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

এরপর ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ায় ব্রিকস-বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনেও দু’নেতার মধ্যে বৈঠক হয়।

সবশেষ চলতি বছরের এপ্রিলে লন্ডনে ২৫তম কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনের (সিএইচওজিএম) সাইডলাইনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি সেখানেও।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)