ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে তালা উপজেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

কামরুল ইসলাম :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করেছে তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানদের পক্ষে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার লিখিত বক্তব্যে বলেন, তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদ হোসেন তালায় যোগদানের পর থেকে নানা ধরণের অনিয়ম, দূর্ণীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে জনগণকে অতিষ্ট করে তুলেছেন। সরকারি, বেসরকারি, জনপ্রতিনিধি তার স্মরণাপন্ন হলে আইন-কানুন নিয়মের তোয়াক্কা না করে মনগড়া সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। উপজেলা পরিষদকে একটি ভীতিকর দপ্তরে রুপান্তরিত করেছেন।

 

তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার তালা উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভার মিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে একটি বার্থরুম নির্মাণের প্রস্তাব করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এছাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং সমবায় কর্মকর্তা তাদের বিভাগীয় আলোচনায় বক্তব্য উপস্থাপনকালে তাদের গালিগালাজ ও অপমানজনক কথাবার্তা বলেন। সভার একেবারে শেষ পর্যায়ে টিআর কাবিখার বিষয়ে জটিলতাসমূহ নিরসনকল্পে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের পক্ষে নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে সমাধানের প্রস্তাব করলে ১ নং ধানদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেটিকে সমর্থন করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মনপূত না হওয়ায় ধানদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে শারীরিকভাবে আঘাত করতে উদ্যত হন। সভায় উপস্থিত অন্যান্য সদস্যদের সক্রিয় হস্তক্ষেপে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের শারীরিক আক্রমন থেকে তিনি রক্ষা পান। এ সময় তিনি উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের গেটের ভিতর আটকে রাখার নির্দেশনা দিয়ে পুলিশ এসে ধানদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে অবহিত করার পর তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয়, ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত চারজন মহিলা সদস্যকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বিয়য়টি তাকে অবহিত করে জানানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। আগামী ৩ জুন পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে, ৪ জুন উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদ হোসেনকে প্রত্যাহার করা না হলে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটসহ নানাবিধ কর্মসূচী গ্রহন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তালা-কলারোয়া সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফালুৎফুল্লাহসহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্ধরা উপস্থিত ছিলেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদ হোসেন জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)