কুশখালীতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ১৮ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতন করেছে মেম্বর

কামরুল ইসলাম:
বিয়ের কাগজ দেখতে চাওয়ায় তাৎক্ষণিক কাগজপত্র না দেখাতে পারায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ১৮ ঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে আটকে রেখে অমানষিক নির্যাতন করেছেন সাতক্ষীরা সদরের কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্র্ডের মেম্বর আলমগীর হোসেন। এমনকি ওই ১৮ ঘন্টায় তাকে ১টি রুটি ও কিছু বন্দে(মিষ্টি) ছাড়া আর কিছইু খেতে দেওয়া হয়নি। পরিবারের লোকজন বিয়ের বিষয়ে বারবার বলা সত্ত্বেও মেম্বর বিশ্বাস না করে ওই গৃবধূর বাবার বাড়ির সদস্যদের সাথে ভোটের শত্রুতাকে কাজে লাগিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। শুক্রবার বিকালে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ জানতে পেরে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা হতে শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা সদরের কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদে আটকিয়ে রাখার এ ঘটনা ঘটে।

গৃহবধূর নাম তানজিলা খাতুন(২২)। সে সদরের ভাদড়া গ্রামের মোজাম্মেল ইসলামের মেয়ে ও কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুুর গ্রামের আরিফুল ইসলামের স্ত্রী।

গৃহবধূ তানজিলা খাতুন বলেন, আমি আমার খালাতো ভাইকে দেড় বছর আগে গোপনে বিয়ে করি। পারিবারিক সমস্যার কারণে বিষয়টি পরিরবারের কাউকে জানায়নি। ৭ মাস আগে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। এরপর মাসখানেক আগে আমার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানাায়। কিন্তু আমরা বিয়ে করেছি এটি তারা বিশ্বাস করেননি। তারপর তারা সকলে মিলে আমাদের আবার বিয়ে দেন।

গতকাল আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে আসলে মেম্বর আলমগীর হোসেন আমাদের কাছে বিয়ের কাগজ দেখতে চাইলে আমরা তাৎক্ষণিক কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হই। এরপর আমাদের বিয়ে হয়নি, আমার গর্ভে অবৈধ বাচ্চা এসব কথা বলে চৌকিদারের মাধ্যমে তিনি আমাকে ও আমার স্বামীকে পরিষদে নিয়ে যান। এরপর বাড়ির লোকজন বিয়ের কাগজ এনে দেখালে মেম্বর বলে ওই কাগজ ভূয়া। এরপর সারারাত ধরে মেম্বর আমাদের পরিষদে আটকে রাখে। আমাদেরকে ১টি রুটি ও কিছু মিষ্টি ছাড়া আর কিছুই খেতে দেয়নি। আমার পেটে বাচ্চা, সারারাত্র আমাকে ওই ঘরে বসে থাকতে হয়েছে।

তবে মেম্বর আলমগীর হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কাউকে আটকে রাখেনি। স্থানীয়রা তাদেরকে আটকে পরিষদে আনলে চৌকিদারের মাধ্যমে তাদেরকে পরিষদে রাখা হয়।

কুশখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল বলেন, মেম্বর শুক্রবার বিকালে আমাকে জানালে আমি পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশ এসে তাদেরকে নিয়ে যায়। এছাড়া এ ব্যাপারে আমি আর কিছুই জানিনা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই প্রদীপ রায় বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমরা সেখানে যায় এরপর তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। থানা পুলিশকে তারা বিয়ের কাগজ দেখালে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূকে আটকে রাখার ঘটনায় যদি মেম্বর জড়িত থাকে তবে তদন্ত করে দোষী প্রমাণ হলে মেম্বরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)