তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ধসে পড়ছে :সংস্কার প্রয়োজন
তালা প্রতিনিধি :
চিকিৎসা সেবার উপর যেখানে সাধারণ জনগণ আস্থা রেখে নিজেকে নিরাপদ আর আরোগ্য লাভের ভরসা করে, সেখানেই আবার ছাদ চাপায় মৃত্যুর আশঙ্কা। শুধু রুগীরা নয় বরং দায়িত্বরত সেবিকা ও ডাক্তারগণ ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটি জরাজীর্ণ আর বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ধসে পড়ছে হাসপাতালের দেওয়াল ও কনক্রিটের ছাদ।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের বিভিন্ন পিলারে ছোট বড় ফাটল ধরেছে। বিল্ডিং এর ভেতর থেকে অনেকাংশ চৌচির হয়ে গেছে। কিছু কিছু কেবিনের উপরের ছাদ ধসে রড বের হয়ে গেছে। হাসপাতালটির জরুরী বিভাগের ভেতরে দেখা মিলেছে অন্যদৃশ্য। ছাদ থেকে কনক্রিট ধসে যেন দোতলা দেখা যাচ্ছে। রুগীরা প্রবেশ করেই যেটি দেখে আর চিকিৎসা সেবা না নিয়ে বাড়ীতে ফিরতে চান।হাসপাতালটির মূল ফটকে ধরেছে বড় ফাটল। ভূমিকম্প বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে পুরো ভবনটির ধসে যাওয়ার আশঙ্কাপ্রদ।
এমনটি হাল এখানকার। হাসপাতালটির জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহুত্বে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূরঘটনা।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসা নিতে আসা তালা সদরের আটারই গ্রামের ইমরান হুসাইন জানান, তালা হাসপাতালের পুরাতন ভবনটি রুগীদের জন্য অনিরাপদ। গোটা ভবনের বিল্ডিং এর ১ম ও ২য় তলার হাসপাতালের ছাদ ও পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। তালা উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবার হাসপাতালটির এমন অবস্থা হলেও কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। বড় ধরনের কোন দূরঘটনা ঘটার পরেই হয়তো কতৃপক্ষ্যের নজরে আসবে। দূরঘটনার আগেই হাসপাতালটির সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অপর এক রুগীর আত্নীয় উপজেলার মাগুরা গ্রামের মঞ্জুরুল করিম জানান, আমার মা অসুস্থ তাই গত দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। রাতে মায়ের সাথেই থাকি। গতরাতে ঘুমিয়ে থাকা কালে হাসপাতালের ছাদের কনক্রিট ধসে আমার গায়ের উপর পড়ে। আমি রাতে ভয়ে চিৎকার করে উঠি। শুধু এক স্থানে নয় গোটা হাসপাতালের ছাদ ও আরসিসি পিলারে ফাটল। চিকিৎসা সেবার এই কেন্দ্রটি সংস্কার জরুরী।
এ বিষয়ে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক ডাক্তার রাজিব সরদার জানান, হাসপাতালে বিভিন্ন দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় সিমেন্ট বালু ধসে রড বের হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দ পেতে অনেক সময় লাগে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কুদরত -ই খুদার সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়বস্তু শুনে তিনি বলেন ব্যস্ত আছি পরে কথা হবে। পরবর্তীতে একাধিক বার ফোন কল করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ তাওহিদুর রহমানকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, তালা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমার দপ্তরে জানায়নি কিংবা সেখান থেকে লিখিত কোন অভিযোগ পায়নি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে আবেদন করলে হেলথ ইনঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকে এবিষয়ে অবহিত করবো। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।