আমার মা আমার পৃথিবী
ডেস্ক রেপোর্ট:
সোহাগভরা মায়ের পরশ
সারা দেহে জড়িয়ে আছে আজো
কোথায় মাগো লুকিয়ে থেকে
স্বপ্নপুরীর রাজকন্যা সাজো।
নিঃস্বার্থ মমতা, ভালোবাসার প্রতীক, মায়ামাখা শাসনের ছায়া, এ যেন মায়েরই বিকল্প রূপ। সন্তানের কাছে জগতের সবচেয়ে আপন, প্রিয় হচ্ছেন তার মা। জন্মের পর তিনিই কেবল নিজের স্বপ্ন দিয়ে তিল তিল করে বড় করে তোলেন তার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে। গড়ে তোলেন আগামীর সম্ভাবনাময় একজন মানুষ হিসেবে।
মায়ের ভালোবাসা একটি বিশেষ দিনের অভ্যন্তরে গণ্ডিবদ্ধ থাকে না কখনোই। তবুও বছরের একটি দিন এমন ভালোবাসা ঘটা করে পালন করলে দোষেরই বা কি! আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশ্ব মা দিবসের ইতিহাস শতবর্ষের পুরনো। যুক্তরাষ্ট্রে আনা জারভিস নামের এক নারী মায়েদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এ কাজের মধ্য দিয়ে তিনি মায়েদের কর্মদিবসের সূচনা করেন।
১৯০৫ সালে আনা জারভিস মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন।
১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা।
এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদী সমাজে বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় এটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে আসছে। সেখানে উদযাপনের জনপ্রিয়তায় বড়দিন এবং ভালোবাসা দিবসের পর মা দিবসের অবস্থান।
সেই বিবেচনায় বাংলাদেশে এ দিবসটি ঘটা করে পালনের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। যদিও মাকে সম্মান, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা দেখাতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে নেয়ার যুক্তি অনেকের কাছেই সেভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে অনেকেই মনে করেন মাকে সম্মান দেখাতে, তাকে গভীরভাবে স্মরণ করতে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত মা দিবসের গুরুত্ব রয়েছে।
যে কারণে বিশেষত নাগরিক জীবনে দিনটি পালনের ক্ষেত্রে বেশি সাড়া মিলেছে কয়েক বছর ধরে। মাকে ভালোবাসা আর তার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধার বিষয়টি পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতে অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশতের কথা। কবি-গীতিকাররা অজস্র ছত্র রচনা করেছেন।
মা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্পিত’ এর উদ্যোগে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। একই স্থানে রাতে সৎসঙ্গ মাতৃ সম্মেলন ও বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলকেন্দ্রিক সংগঠন সৎসঙ্গ।