খালেদার মুক্তির দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ সোমবার
ডেস্ক রিপোর্ট:
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি।
শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ১৪ মে ঢাকাসহ দেশের সব মহানগরের থানায় থানায় এবং উপজেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।’
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নিবার্চন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের আর মাত্র দু’দিন বাকি। নির্বাচনকে ঘিরে সেখানে ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা থাকলেও সরকারের অনাচারে এক ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার, বাড়িতে বাড়িতে সাঁড়াশি অভিযান সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তাণ্ডবের পাশাপাশি এখন আরও একটি মাত্রা যোগ হয়েছে, সেটি হলো সাদা পোশাকধারী পুলিশ প্রিজাইডিং অফিসারদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা তাদের বাসায় গিয়েও খোঁজ খবর নিচ্ছে। এ নিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারদের মনে একধরণের সংশয় ও ভীতি বিরাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রীর একজন আত্মীয় ও সরকার দলীয় এমপি দলবলসহ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খুলনায় অবস্থান নিয়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদেরও হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। প্রতিদিনই নাকি তিনি প্রশাসন, পুলিশসহ নানা শ্রেণির মানুষদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন। এদিকে কেসিসি নির্বাচনী এলকায় সাদা পোশাকধারীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতারের পাশাপাশি দলীয় কর্মকাণ্ডে যারা বেশি সক্রিয়, যাদেরকে সম্ভাব্য নির্বাচনী এজেন্ট করা হতে পারে তাদেরকেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও গ্রেফতার করছে, যা সাদা পোশাকে গ্রেফতার না করা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া পনেরটি নির্দেশনার সুষ্পষ্ট লংঘন।’
রিজভী বলেন, ‘কেসিসি এলাকায় ভোটারদের মধ্যে এখন আতঙ্কিত পরিবেশ বিরাজ করছে। এমনও শোনা যাচ্ছে আগামী দু’দিনে ধানের শীষের সরব ও নীরব সমর্থকদের পুলিশ আটক করবে ভোটের দিন পর্যন্ত। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হাতে হাতে বিপুল পরিমাণ বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। এখনও বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘অপরদিকে খুলনায় পুলিশ জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করছে। কেসিসি নির্বাচন নিয়ে কমিশনের ভূমিকা সন্দেহজনক। কারণ নির্বাচন নিয়ে সরকারি তাণ্ডবে ইসি উদাসীন। বরং সরকারি দল থেকে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে আপত্তি ওঠাতে কমিশন সেখানে একজন যুগ্ম সচিবকে পাঠিয়েছে। অথচ ইসি সচিব বলছেন রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে আ’লীগের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি, তাহলে যুগ্ম সচিবকে খুলনায় পাঠানো রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করা নয় কি?’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের অনুকূলে নির্বাচন রাখতেই এই ব্যবস্থা। মনে হচ্ছে-খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পুলিশ, আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডার ও নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে একই টিমে খেলছে। খুলনার ৩১টি ওয়ার্ডের প্রায় সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। আমরা বারবার কেএমপি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন উদেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে প্রত্যাহার করেনি।’
তিনি বলেন, ‘খুলনা সিটিতে ২০দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ সুশীল সমাজ খুলনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও ভীতিমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। এটি তো কোনো অন্যায় বক্তব্য নয়। তাহলে নির্বাচনের মাত্র ২ দিন আগে এখনও কেন সেখানে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়নি সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে আবারও খুলনায় সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিসহ কেএমপি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে নির্বাচনী এলাকায় ভীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’