পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ

অনলাইন ডেস্ক:

ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিন্স ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন, ভিনগ্রহীদের ঘাঁটিয়ো না, তাহলে বিপদ আমাদেরই হতে পারে। কিন্তু, মানুষ কবে নিজের বিপদের পরোয়া করেছে? এলিয়েনের অস্তিত্ব খুঁজতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ বানিয়ে ফেলেছে চীন।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যায়ে রেডিও টেলিস্কোপটি তৈরি করেছে চীন। যার নাম দেয়া হয়েছে Five-hundred-meter Aperture Spherical Telescope (FAST).৪,৬০০টি ত্রিভুজাকৃতির প্যানেলবিশিষ্ট এ টেলিস্কোপের ব্যাস ৫০০ মিটার। ২০১১ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের প্রদেশের পিংটাং কাউন্টিতে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।

যার ‘প্রতিফলক’ হতে পারে প্রায় ৩০ টি ফুটবল গ্রাউন্ডের সমান। এই টেলিস্কোপ প্রধানত ভিনগ্রহের প্রাণের সন্ধান করবে।

এক নজরে জেনে নেয়া যাক চিনের তৈরি এই টেলিস্কোপ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

অ্যাপারচার স্ফেরিক্যাল রেডিও টেলিস্কোপ বা ফাস্ট-এর পরিধি হল প্রায় ৫০০ মিটার।

এই টেলিস্কোপ বানাতে খরচ হয়েছে মোট ১৪ কোটি ইউরো।

৪৪৫০টি প্যানেল দিয়ে তৈরি এই টেলিস্কোপ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে ভিনগ্রহীদের খোঁজ।

প্রায় ১৩০০ আলোকবর্ষ দূরের যে কোনও জিনিস এই টেলিস্কোপ টাওয়ারে ধরা পড়বে।

চীনা সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া-র খবর অনুযায়ী আগামী দশ বছরে আরও উন্নত ও আধুনিক টেলিস্কোপ তৈরি করার প্রথম ধাপ এটি।

চীনের মহাকাশ গবেষণাকে আরও উন্নত করতে এই টেলিস্কোপ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেবে বলে মনে করছেন চিনের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল অবসার্ভেশন (এনএও)- প্রধান ইয়ান জুন।

ছয় দশক ধরে ভিন গ্রহের সন্ধান করে চলেছি আমরা। তবে ব্রহ্মাণ্ডের অন্যান্য গ্যালাক্সিতে প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকলে, এই টেলিস্কোপ এর সদুত্তর দিতে পারবে বলে আশাবাদী এনএও-র বিজ্ঞানীরা।

টেলিস্কোপ ফাস্ট-র কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে।

দৈত্যকার টেলিস্কোপকে প্রতিস্থাপন করার জন্য প্রায় ৫ কিলো মিটার জুড়ে বসবাসকারী ১০ হাজার মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়। পুরো জায়গাকে নিস্তব্ধতায় ঢাকতে তাদেরকে সারানো হয়েছে বলে জানান এনএও-র বিজ্ঞানীরা।

প্রথম দু’তিন বছর এই টেলিস্কোপের প্রতিক্রিয়া বুঝতে বৃহত্তর গবেষণার দিকে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা ছোট ছোট জিনিসের উপর গবেষণা করে এগোতে চান।

গত মাসে রুশ টেলিস্কোপে ধরা পড়ে ছিল একটি অজানা শক্তিশালী সংকেত। এই সংকেত বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছিল কিন্তু এত দূর থেকে সংকেত এসেছিল যে তার কিনারা করতে পারেননি তাঁরা।

তবে এমইটিআইয়ের প্রধান ডগলাস ভাকোচ জানিয়েছেন, ফাস্ট টেলিস্কোপ এই সংকেতের রহস্য উদ্ধার করার ক্ষমতা রাখে।

ফাস্ট টেলিস্কোপের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত মোবাইল চালু রাখা নিষিদ্ধ।

গুইজহো পর্বতের আশপাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন অপেক্ষাকৃত গরিব। এখান থেকে সরানোর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাঁদেরকে বাড়ি বা নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সরানোর জন্য প্রায় ২৭ কোটি ডলার অর্থ খরচ হয়েছে বলে এনএও-র সূত্রের খবর।

ফাস্ট টেলিস্কোপ সফলভাবে প্রতিস্থাপন হওয়ার জন্য এনএও-র বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)