৩ কোটি কৃষককে আনা হবে ডিজিটাল ডাটাবেজে

ডেস্ক রিপোর্ট:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারাদেশে কৃষকের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ৩ কোটি কৃষককে ডাটাবেজে আনা হবে।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, প্রত্যেক কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষি সেবা সহজে পৌঁছে দিতে ‘কৃষি বাতায়ন’ তৈরি করা হচ্ছে। কৃষি বাতায়নে সারাদেশে কৃষকের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬৫ লাখ কৃষকের তথ্য ডাটাভূক্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের কৃষি উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ সংগঠন কৃষকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের সংগঠিত করে তাদের দাবি আদায়সহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কৃষক লীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।
কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনের নেতাকর্মী ও কৃষক সমাজসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর পরই কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেন। তার সরকার কৃষকদের কল্যাণে পঁচিশ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। তিনি উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন।
আজকের এই দিনে তিনি ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ১৮ জন কৃষক ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কৃষক ও কৃষিবান্ধব সরকার। আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। পরবর্তী সময় বিএনপি-জামায়াত  জোট সরকার বাংলাদেশকে আবারো খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে।
তিনি বলেন, আমরা ২০০৯ সাল থেকে কৃষির সার্বিক উন্নয়নে কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। সার, বীজসহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস, কৃষকদের সহজশর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা দেয়া, ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগসহ নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করেছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্যা, খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জেনোম সিকুয়েন্স উন্মোচন ও মেধাসত্ব অর্জন হয়েছে। আমরা কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও বহুমুখীকরণ, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের এসব কার্যক্রমের ফলে দেশের কৃষি খাতের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। দেশের কৃষি খাতে সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে কৃষক লীগের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে।
কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আরো বেশি আত্মনিয়োগ করে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)