বছর পূর্ণ হলেও উদঘাটন হয়নি ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যার রহস্য

নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যার এক বছর পূর্ণ হলেও পুলিশ আজও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। যে কারণে মামলার বাদি ও হত্যার শিকার ইমনের মা-বাবা হতাশায় ভুগছেন। তারা অনতিবিলম্বে প্রকৃত হত্যাকারিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার শেখ হাসিবুল হাসান ওরফে ইমন (২১) খুলনা আযম খান কমার্স কলেজে অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ছিল। একই সাথে তিনি সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বরত ছিলেন। ঘটনার তারিখ ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রাত অনুমান নয়টার দিকে ইমনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ইমন ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি ওই রাতে ইমন বাড়িতেও ফেরেনি। এ বিষয়ে ইমনের মা-বাবাসহ সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরদিন সকাল (১৭ জানুয়ারি) নয়টার দিকে বাদীসহ পরিবারের লোকজন জানতে পারেন সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের মাটিয়াডাঙা গ্রামের একটি মাছের ঘেরের মধ্যে ইমনের লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে বাদীসহ অনেকেই ওই স্থানে যেয়ে ইমনের লাশ সনাক্ত করেন। পুলিশ সুরতাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য ইমনের লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় ইমনের চাচা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৭, তারিখ-১৭/০১/২০১৭ইং। ধারা-৩০২/৩৪। মামলায় অজ্ঞাত নামা আসামী করা হয়। পুলিশ এ মামলায় ওই দিনই তিনজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনে। এরা হচ্ছে সুলতানপুর গ্রামের শেখ হাফিজুর রহমান ওরফে শাহ আলমের ছেলে শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুরাদ, একই গ্রামের শেখ সেলিমুর রহমান সেলিমের ছেলে শেখ বখতিয়ার রহমান ওরফে বিপ্লব এবং রাজা মোল্লার ছেলে রেজাউল মোল্লা ওরফে রনি। পুলিশ তাদেরকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি। এক পর্যায়ে আসামীরা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়। এর কিছুদিন পর এ মামলায় সন্দেহ ভাজন আর একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি হলেন সুলতানপুর গ্রামের কাজী ওহাব আলী সরদারের ছেলে কাজী শহিদুল ইসলাম। তাকে পুলিশ রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। এ সময় আসামী শহিদুল মামলার বাদী আলমগীর হাসান ওরফে আলমের হত্যায় সম্পৃক্ততা আছে বলে পুলিশের কাছে জানায়। কিন্তু আদালতে বিচারকের সামনে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার সময় আসামী শহিদুল জানান, পুলিশ নির্যাতন করে তার মুখ থেকে জোর করে বাদী আলমগীর হাসানের নাম বের করে। এক পর্যায়ে এ আসামীও আদালত থেকে জামিনে বের হয়। বিষয়টি নিয়ে ইমনের বাবা-মা ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে বাদী আলমগীরের সম্পর্কের ঘাটতি হয়।
এদিকে, সদর থানা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত করে কোন কুল কিনারা না পাওয়ায় তদন্ত ভার সাতক্ষীরা সিআইডির ওপর ন্যস্ত হয়। যা আজও তদন্তাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলেও আমি তদন্তভার পেয়েছি অনেক পরে। তিনি জানান, তদন্ত কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। তাড়াতাড়ি ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)