২১ আগস্ট মামলার রায়ের দিন ধার্য হবে আজ

২১ আগস্ট নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য হবে আজ।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এর বিচার চলছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আসামিপক্ষের পেশ করা আইনি পয়েন্টের আলোকে রাষ্ট্রপক্ষের শেষ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও যুক্তি দেয়া শেষে আজই রায় ও আদেশের দিন ধার্য হবে।

এর আগে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে পাঁচজন আসামির পক্ষে আইনজীবী মাঈনুদ্দিন আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন। অন্য আসামিদের পক্ষে আইনি পয়েন্টে এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনি পয়েন্টের আলোকে সামগ্রিক যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান। সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনি পয়েন্টে তার যুক্তি পেশ শেষ করেন। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংগঠনে হাওয়া ভবনসহ ১০টি ষড়যন্ত্রের স্থানের নাম উল্লেখ করেন। ওই স্থানগুলোতে বসেই ২১ আগস্ট হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ছক করা হয়েছে বলে তিনি যুক্তি দেন।

এ মামলায় ৮ আসামি জামিনে রয়েছেন উল্লেখ করে প্রধান কৌসুলি মামলার রায় ও আদেশের আগ পর্যন্ত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণে আবেদন দাখিল করেন। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ এ দাবী করে আইন অনুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আর্জি পেশ করা হয়।

সৈয়দ রেজাউর রহমান আদালত, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যগনসহ এ মামলার কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে তিন কার্যদিবস আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল, বিশেষ পিপি মো. আবু আব্দুল্লাহ্ ভুঁইয়া ও আকরাম উদ্দিন শ্যামল আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন।

মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলা করেছিল জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি)। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। ভয়াবহ, বর্বরোচিত ও নৃশংস এই হামলার পর ২০০৪ সালের ২২ আগস্ট মতিঝিল থানার এসআই শরীফ ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা (নং-৯৭) দায়ের করেন।

২০০৮ সালের ৯ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে সিএমএম আদালতে দু’টি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন সিআইডির সিনিয়র এএসপি ফজলুল কবির। ওই বছরই মামলা দু’টির কার্যক্রম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ স্থানাস্তর করা হয়। এ ট্রাইব্যুনালে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের ২৯/১১ (হত্যা) ও ৩০/১১ (বিস্ফোরক) মামলা দু’টির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর ২০০৯ সালের ২৫ জুন এ মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। ওই বছরের ৩ আগস্ট আদালত অধিকতর তদন্তের আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ ৩০জনকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ২ জুলাই আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন আবদুল কাহার আকন্দ। অধিকতর তদন্তে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) পাশাপাশি হাওয়া ভবনের সংশ্লিষ্টতাও খুঁজে পান তিনি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)