হ্রাস পেয়েছে কাঁদা মাখা শৈশব

এখন সাল ২০১৮। প্রায় শিশুরা ভুলেই গেছে কাঁদা মাখার কথা। কঁদা দেখলেই তারা যেন ভয় পায় বা ঘৃণা করে। আর শহরের বাচ্চারা তো কাঁদা কি জিনিস সেটাই বোধহয় ভুলেই গেছে।

এখান থেকে ২০ বছর আগে ফিরে যাই, তখনকার বাচ্চারা তো ঠিক এমন ছিল নাহ। প্রায় সব বাচ্চাদের দেখতে পাওয়া যেত কাঁদামাটিতে খেলা করতে। কাঁদায় কাঁদায় ভরে থাকত তাদের সমস্ত শরীর, পরনের কাপড়ও পর্যন্ত থাকত না তাদের শরীরে।

দুপুরের প্রচন্ড রোদের মাঝে তাদের দেখতে পাওয়া যেত পুকুরে কঁদা ছোড়াছুড়ি করতে। কোন কোন সময় পুকুরপাড়ে মায়েদের দেখতে পাওয়া যেত, একটা লাঠি হাতে। শুনতে পাওয়া যেত মায়েদের কন্ঠে, “এই খোকা উঠলি না এখনও, আমি নামবো দেখবি”

তবে এখন কেন বাচ্চাদের মাটিতে খেলতে দেখতে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় না পুকুরের মাঝেও। এটা কি সালের আপগ্রেড এর দোষ? নাকি আপগ্রেড মায়েদের দোষ?

শহরের বাচ্চারা তো শাঁতারই জানে না,কাঁদা ছোড়াছুড়ি তো দুরের কথা।

এখনকার বাচ্চাদের পুকুরের মাঝে শাঁতার, লাফালাফি, কাঁদা ছোড়াছুড়ি করতে দেখা যায় না। তাদের পাওয়া যায় ছোফার মাঝে, খাটের উপর বসে টিভির সামনে। কাঁঠুন, গোপালভাড়, বাচ্চাদের সিরিয়াল এইসব নিয়ে তারা সময় কাটায়। আপগ্রেড মায়ের আপগ্রেড সন্তান বলে কথা।

কাঁদা মাখলে,ছোটাছুটি,খেলার মাঝে থাকলে যে তাদের সন্তানের শরীর খারাপ হবে,কালো হয়ে যাবে। তারা কেন এসব এর মাঝে থাকবে, এসব এর মাঝে থাকলে তো আর তাদের চর্বি ওয়ালা শরীর গড়বে না, রোগ বালাই বাঁসা বাধতে পারবে না।

কাঁদামাখা শরীর শিশুদের এখনো দেখা যায় গরীব দরিদ্র অসহায় মায়ের পরিবারে। তাদের সন্তানের প্রতি ততটা খেয়াল থাকে না, যতটা খেয়াল থাকে তাদের খূধার্ত পেট এর দিকে।

তাই তাদের সন্তানেরা কাঁদামাটির ওপরেই থাকে,আর স্বাধীন ভাবে ছোটাছুটির ওপর বড় হতে থাকে। এবং আপগ্রেড মায়েদের সন্তান এর থেকেও তাদের সন্তানকে ওপরঅলা সুস্থ রাখে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)