সুন্দরবনে জেলেদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ইলিশ লুটের অভিযোগ বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে

সুন্দরবনের কয়েকজন বনরক্ষীর বিরুদ্ধে জেলেদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ অর্থ সহ দু’শতাধিক ইলিশ মাছ লুটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৩ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন সুপতি, কটকা, কেওড়াবুনিয়া, দুধমুখী, শ্যালারচর, হরিণটানা ও আড়াইবেকিসহ বন অভ্যন্তরের বিভিন্ন এলাকায় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।
জেলেদের বরাত দিয়ে বন সংলগ্ন শরণখোলা গ্রামের বাসিন্দা মৎস্য ব্যবসায়ী ও মহাজন ফেরদৌস হাসান এবং মাহবুব হাওলাদার জানান, রবিবার সন্ধ্যায় স্মার্ট পেট্রোলিং টহল দলের সদস্যরা শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করে। ওই টহল দলের নেতৃত্ব দেন শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ ফারুক আহমেদ। এ সময় সমুদ্র থেকে সংগৃহীত ইলিশ মাছ নিয়ে ফেরার পথে স্টেশন কর্মকর্তা ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে স্মার্ট পেট্রোলিং টহল দলের সদস্যরা শরণখোলা গ্রামের জেলে মিজান মুন্সি (৩৭), সোনাতলা গ্রামের আসাদুল হাওলাদার (৪০), বকুলতলা গ্রামের মিলন হাওলাদার (৩৫), রাজাপুর গ্রামের আঃ রহিম (৩৮), সোনাতলা গ্রামের জাকির মল্লিক (৪২), সাদ্দাম (৩০), নান্টু (৪০), মামুন (৩৫) সহ ২০/২৫ টি ইলিশ আহরিত নৌকা ও ট্রলারের গতিরোধ করে। পরে জেলেদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নৌকা ও ট্রলারে তল্লাশি চালিয়ে জোরপূর্বক বড় সাইজের ২ শতাধিক ইলিশ মাছ ও নগদ লক্ষাধিক টাকা লুটে নেয়।
মৎস্য ব্যবসায়ী মাহবুব হাওলাদার বলেন, বনরক্ষীরা বনদস্যূদের মত আচরণ করায় জেলেসহ স্থানীয় মহাজনরাও রীতিমত হতবাক হয়েছেন। স্টেশন কর্মকর্তা ফারুকের বিরুদ্ধে এর পূর্বেও জেলেদের জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নেয়া সহ ঘুষ দুর্নীতির বহু অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, রহস্যজনক কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে বহাল রয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। তিনি এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করেন। পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার মধ্যে অসাধু ওই কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাহার করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানান। অন্যথায় বনরক্ষীদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তবে, এ বিষয় শরণখোলা ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ ফারুক আহম্মেদ এর ০১৭২৪৬২৫৪৪০ নং মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি তিনি শোনেননি। তবে, জেলে ও মহাজনরা অভিযোগ দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের (ডিএফও) মোঃ মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)