সাতক্ষীরা-৪ আসনে জনগণের সেবক হতে চাই মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান

কালিগঞ্জ যেন এতিম। দেখার কেউ নেই। এমন আফসোস ব্যক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আতাউর রহমান বলেন, আমি চাই জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারলে এ অঞ্চলের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন করতে। তিনি আরও বলেন, আমার এলাকার মানুষের মতই আমিও অখন্ড কালিগঞ্জের স্বপ্ন দেখি। কিন্তু বাস্তবতায় খণ্ডিত কালিগঞ্জ এখন দুটি আসনে বিভক্ত। একটি সাতক্ষীরা ৩, অপরটি সাতক্ষীরা ৪। আমি সাতক্ষীরা-৪ আসনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।

রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে একথা বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার শেখ আতাউর রহমান। তিনি বলেন উন্নয়নের গতিধারা যাতে স্থায়িত্ব লাভ করে সেজন্য আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। আর এজন্য আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি। সবার দোয়া চাই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সুযোগ পেলে জনগণের সেবা করেই কাটাতে চাই বাকি জীবন। সন্ত্রাসকে না বলুন, মাদককে না বলুন এই নীতি ধারণ করে আমি আমার এলাকায় তৃনমূল পর্যায়ে কাজ করছি। তাদের কাছে নৌকায় ভোট চেয়েছি। আমার দল আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দেবে এমনকি কোন কলাগাছকে মনোনয়ন দিলেও আমি তার পক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো।

শেখ আতাউর রহমান বলেন ২০১৩ সালের জামায়াতি সহিংসতার সময় মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ এবং সর্বোপরি স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। সে সময় আমি যেটুকু পেরেছি জনগণকে সহায়তা দিয়েছি। এর থেকে আরও বেশী সহায়তা দেওয়ার আগ্রহ পোষণ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমি উত্তর শ্রীপুরে মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে বর্তমান ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৫০ এরও বেশী। আমার রাজনৈতিক পরিচয় বলতে আমি তৃনমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছি। তবে কোন সাংগঠনিক পদে যাইনি। আওয়ামী লীগ ও সমমনা দল এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি আমার প্রতি আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আমাকে সহায়তা দেবেন। ২০০৮ সালে পুলিশের চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আমি নির্বাচনী ভাবনায় নেমেছি। এখন আমি তৃনমূল পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯ নম্বর সেক্টরে আমি মেজর জলিলের সাথেই ছিলাম।

তিন ছেলের একজন সেনা কর্মকর্তা, অপর দুইজন প্রকৌশলী হয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে বসবাস করেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কল্যাণমূলক কাজ হিসাবে কালিগঞ্জের উত্তর শ্রীপুরে বিএম টেকনিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা, কফিলউদ্দিন মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা, বাজারগ্রাম রহিমপুর ও কাশেমপুর মসজিদের প্রতিষ্ঠা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করে জনগণের কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করেছি। তিনি জানান ছাত্রজীবনে তিনি খুলনা সিটি কলেজে লেখাপড়ার সময় ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেবহাটা কালিগঞ্জ আসনে কাজ করেন এবং ১৯৭১ এ সংগ্রাম পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। ভারতের বিহারের চাকুলিয়ায় মুক্তিফৌজ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে সিলেকশন পেয়ে কমিশন র‌্যাংক ট্রেনিং গ্রহণ এবং ৫ আগস্ট তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে ব্রেভো কোম্পানির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেনাবাহিনীর ডেপুটি চীফ অব স্টাফ জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্তৃক তিনি সহ ১৪ জন অফিসার চাকুরিচ্যুত হন। পরে ১৯৭৩ সালে তিনি যোগদান করেন পুলিশ বাহিনীতে। আতাউর রহমান আরও বলেন, ২০০৭ সালে জোট সরকারের আমলে তিনি আবারও চাকুরিচ্যুত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আংশিক তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে পুরস্কৃত হন।

আতাউর রহমান বলেন, সারাজীবন চাকুরির মধ্য দিয়েই কাটিয়েছি। আগামী সময়গুলি তিনি জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করতে চান।

মতবিনিময় সভায় তার সহযোগী শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হামিদ, আওয়ামী লীগ নেতা অমল কুমার ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নরিম আলী মাস্টার, জাসদ (ইনু) নেতা মোদাচ্ছের হোসেন ঝন্টু, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক সুকুমার দাস বাচ্চু ও আবুল হাসেম। তিনি বলেন সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। আমি তাদের সাথে সম্পর্ক রেখে জনগণের সেবা করতে চাই।

মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে আমি তাদের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারবো।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)