সাতক্ষীরা-৩ ও ৪ আসনের সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত

শহর প্রতিনিধি :
প্রস্তাবিত সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়ার বিষয়ে অভিযোগ-আপত্তির শুনানি শুরু হয়েছে ২১ এপ্রিল থেকে। এই শুনানি শেষ হবে ২৫ এপ্রিল।  এর অংশ হিসেবে আজ সাতক্ষীরা- ৩ ও ৪ আসনের নতুন সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ এপ্রিল সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবীসহ উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা জেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল হক সরদার, সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচ এম গোলাম রেজা, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ, শ্যামনগর উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আতাউল হক দোলন প্রমুখ।
কালিগঞ্জ উপজেলাকে অখণ্ডিত রেখে সাতক্ষীরা-৩ ও ৪ আসনের যে নতুন খসড়া সীমানা বিন্যাস করা হয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আবেদনকারীদের অধিকাংশ। খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর মোট ৩৬টি আবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা পড়ে।  যার মধ্যে ৩২ টি আবেদন পড়েছে ২০০৮ সালের নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সীমানার পক্ষে। অর্থাৎ এসব আবেদনে কালিগঞ্জ উপজেলার আংশিক সাতক্ষীরা৩ আসনে দেবহাটা ও আশাশুনির উপজেলার সাথে এবং বাকি অংশ শ্যামনগর উপজেলার সাথে সাতক্ষীরা ৪ আসনের সাথে রাখারদিবি জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ৪টি আবেদনে কালিগঞ্জ উপজেলাকে অখণ্ড রেখে নির্বাচনী আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়ার পক্ষে দাবি করা হয়েছে।
আজ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত শুনানি গ্রহণকালে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ সকল কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

উল্লেখ্য,  ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৫টি সংসদীয় আসন ছিল। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশন ৫টির পরিবর্তে ৪টি আসনে বিন্যস্ত করে। এর ফলে সাতক্ষীরা-১ ও ২ আসন পূর্বের অবস্থানে থাকলেও বাকী ৩টি সংসদীয় আসন দু’টি আসনে পরিণত হয়। সাতক্ষীরা-৩ আসনে আশাশুনি উপজেলার সাথে যুক্ত হয় দেবহাটা উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন। অপরদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নকে শ্যামনগর উপজেলার সাথে যুক্ত করে গঠিত হয় সাতক্ষীরা-৪ আসন। পাল্টে যায় ভৌগলিক অবস্থান ও ভোটের হিসাবনিকাশ।
সম্প্রতি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান নির্বাচন কমিশন কালিগঞ্জ উপজেলার ১২ ইউনিয়নকে অখণ্ডিত রেখে শ্যামনগর উপজেলার সাথে সংযুক্ত করে সাতক্ষীরা-৪ আসন এবং আশাশুনি উপজেলা ও দেবহাটা উপজেলাকে নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসন করার খসড়া গেজেট প্রকাশ করে।  এমন ঘোষণায় চূড়ান্ত গেজেটেও এটা বহাল রাখার দাবিতে কেউ কেউ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এবং নির্বাচন কমিশনে আবেদন জমা দেন।  অপরদিকে নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনের অনুরুপ আসন বিন্যাস বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন পালন করেন অনেকেই। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে এ সংক্রান্ত আবেদন জমা দেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ৪০টি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে। এই ৪০টি আসন ছাড়া আরো ২০টি আসনে পরিবর্তনের জন্য আবেদন আসে ইসির কাছে। সেগুলোর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল। খসড়ার ওপর অভিযোগ জানিয়ে ৪০৭টি আবেদন আসে। অপর দিকে খসড়ার পক্ষে আবেদন আসে ২২৪টি। মোট ৬০টি আসনের বিপরীতে সর্বসাকুল্যে ৬৩১টি আবেদন জমা হয়। ২১ এপ্রিল রংপুর, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর ওপর শুনানি হয়েছে। ময়মনসিংহ, সিলেট ও খুলনা বিভাগের আসনের ওপর শুনানি হয়েছে আজ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)