সাতক্ষীরা সদরের লাবসায় নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ

রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে সরকারি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সদরের লাবসা সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ফেরদৌসী আরা মিষ্টিসহ কয়েকজন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রাজস্ব বাবদ ১ শতাংশ টাকা স্থানীয় সরকার বিভাগের গ্রামীণ জনপদ উন্নয়নসহ বিভিন্নখাতে খরচ করা হয়। সে অনুযায়ী লাবসা ইউনিয়নের মথুরাপুর মাঠপাড়া বটতলা থেকে রহিমের বাড়ি পর্যন্ত ইট সোলিং প্রকল্পে ৩৯৭ ফুট রাস্তায় ১নং ইট দিয়ে ছয় ফুট চওড়া রাস্তা তৈরির জন্য দু’ দফায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ফেরদৌসি আরা মিষ্টিকে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কাজ শেষ করতে হবে।

সরেজমিনে সোমবার সকালে সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের মথুরাপুর মাঠপাড়া বটতলা থেকে মৃত আব্দুর রহিমের বাড়ির মোড় পর্যন্ত যেয়ে দেখা গেছে চারজন শ্রমিক রাস্তায় ইট সোলিং এর কাজ করছেন। আখি ভাটা ও এসবি ভাটার তিন নং ইট রাস্তায় ব্যবহার করায় একটি বোঝাই ভ্যান গেলে ইট ভেঙে যাচ্ছে। আবার নির্ধারিত ছয় ফুটের জায়গায় কোথাও সাড়ে ৫ ফুট ও কোথাও ৫ ফুট রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে।

লাবসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. শেখ মুস্তাফিজুর রহমান শাহানওয়াজ,রাস্তার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা কলেজ ছাত্র মেহেদী হাসান ও তার চাচা সিরাজুল ইসলাম জানান, রাস্তা নির্মাণে যে ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা ব্যবহার অনুপযোগী। একটি ইট বাহি ভ্যান যাওয়ার সময় ইট কিভাবে ভেঙে গেল তা দেখিয়ে বলেন, এক নং ইটের পরিবর্তে তিন নং ইট দিয়ে যেভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে তা বছর না ঘুরতেই যান ও মানুষ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এতে বরাদ্দের ৮০ ভাগ লুটপাট করেছেন ইউপি সদস্য ফেরদৌসি আরা মিষ্টি। একইভাবে উত্তর দেবনগরের পাশ থেকে ঝাউডাঙা সংযোগ রাস্তাটি নির্মাণ করে মিষ্টি মেম্বর মোটা অংকের টাকা লুটেছেন। এ ছাড়া ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়া বাবু সাইফুলের বাড়ির সামনে থেকে সানাউল্লার বাড়ি পর্যন্ত একই পন্থায় রাস্তা নির্মাণ করেছেন। তাদের দেখাদেখি ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম গুলির বাড়ির সামনে থেকে খালধার পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে মিষ্টি মেম্বর ও বাবু মেম্বরকে অনুসরণ করেছেন। এ অবস্থা শুধু ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে নয়, প্রায় সমগ্র ইউনিয়ন জুড়ে রাস্তা নির্মাণের একই অবস্থা। ফলে তিন ইউপি সদস্য সরকারি বরাদ্দের মোটা অংশ লুটপাট করে কাজের বেলায় শুভঙ্করের ফাকি দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ফেরদৌসি আরা আখি জানান, অসময়ে ভাল ইট না পাওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করতে ইট একটু খারাপ হয়েছে। গোলাম কিবরিয়া বাবু যেভাবে কাজ করেছেন তাকে অনুসরণ করে তিনি একইভাবে কাজ করেছেন।তবে গোলাম কিবরিয়া বাবু ও আসাদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, বর্ষাকালে ভাল ইট না পাওয়ার একটু খারাপ ইট দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে । তাতে খুব ক্ষতি হবে না।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা খাতুনের সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)