সাতক্ষীরা শহর এখন পুলিশের দৃষ্টির মধ্যে!

জাহিদ হোসাইন:
সাতক্ষীরা শহরকে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে দিতে, অপরাধীকে সনাক্ত করতে এবং কোন দূর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা শহরের ৪৭টি পয়েন্টের ৪৭ পোলে সর্বমোট ১৩৩টি ক্লোজ সার্কিট(সিসি) টিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান। স্থাপনকৃত ওই সিসি টিভিগুলো ‘সিসি টিভি সার্ভিলেন্স কন্ট্রোল রুম এন্ড অপারেশন’ কক্ষে ৩ জন অফিসার সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ ও তদারকী করছেন। এছাড়া ওই রুমে রয়েছে ফোন, মোবাইল, ওয়ারলেস ও অকিটকি। ফলে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সাথে সাথে আ্যাকশনে যেতে পারবে সাতক্ষীরা পুলিশ প্রশাসন।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্র্ষের ছাত্রী নুসরাত জাহান বলেন, আমাদের কলেজের গেটে সিসি ক্যামেরা বসানোর ফলে অপরাধ প্রবণতা অনেক কমে গেছে। বকাটে ছেলেরা আর আগের মতো মেয়েদের উৎপাত করছে না।
সাতক্ষীরা সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, আমাদের দাবি শুধুমাত্র পৌর এলাকায় নয়, পৌর এলাকার বাইরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ গোটা সাতক্ষীরা জেলাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হলে যে কোন ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড অনেকাংশে কমে যাবে।Untitled-1 copy
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রয়ারি মাসে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়। যা এখনও চলমান রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে শহরের জেলা পরিষদ মোড়, আমতলা মোড়, কাটিয়ার জজ বাংলো, পুরাতন সাতক্ষীরা, পি.এন স্কুল মোড় ও তুফান কোম্পানীর মোড় মিলে ৪৭টি পয়েন্টে ১৩৩টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যে কোন সংবাদের ভিত্তিতে বা ক্যামেরার ছবি দৃষ্টে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে পুলিশের কাছে বার্তা পৌছাবে। ওয়ারলেস সেটের সংবাদ শোনার পর ঘটনাস্থলে একাধীক পুলিশের টিমও পৌছে যাবে।
তিনি আরো বলেন, সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপনের মূললক্ষ্য হচ্ছে জেলা বাসীকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কোন অপরাধী যাতে অপরাধ করে পালাতে না পারে তার জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার যোগদানের পরপরই এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া জেলার সবত্র যখন সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে আসবে তখন যেকোন দূর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছাবে, এবং আমরাই দ্রুত ফায়ারসার্ভিস বা এ্যাম্বুলেন্সকে খবর দিতে পারবো।03 copy
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা শহর এখন পুলিশের দৃষ্টির মধ্যে। আমরা জনগণের জান ও মালের যেমন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। কেউ যাতে হয়রানী না হয় সে ব্যাপারেও চেষ্টা আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ক্যামেরা স্থাপনের ব্যাপারে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র জনবল দিয়ে, পোল বসানোর স্থান নির্ধারণসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের এ পরিকল্পনার সুফল পেতে সাতক্ষীরা বাসীর সহযোগীতা প্রয়োজন। শহরে কোন বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন করতে অবশ্যই ক্যামেরার প্রতিবন্ধিকতা করছে কি না তা খেয়াল করতে হবে। এছাড়া অবৈধ বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলার জন্য ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা পৌরসভাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং ক্যামেরা এলাকায় আরো পর্যাপ্ত আলো বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আশাকরি এখন থেকে সিসি টিভি ক্যামেরার সুফল পাবে সাতক্ষীরা বাসী।
তিনি আরো বলেন, সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপনের দ্বিতীয় পর্যায়ে ২২৫ টি এবং ৩য় পর্যায়ে ৩০০টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে প্রযুক্তির মাধ্যমে জেলার সবকটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

দৈনিক সাতক্ষীরা/জেড এইচ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)