সাতক্ষীরায় ফিল্মি স্টাইলে জমি দখল, বৈদ্যুতিক মিটার ও বসতঘর ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ফিল্মি স্টাইলে বৈদ্যুতিক মিটার ও বসতঘর ভাংচুর করে সাইনবোর্ড টানিয়ে এক এনজিও এর নির্বাহী পরিচালকের ক্রয়কৃত ০.৫১ একর জমি জোরপূর্বক দখল করার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের বকচরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এনজিও এর নির্বাহী পরিচালক সাতক্ষীরার পলাশপোল(চৌধুরীপাড়া) এলাকার আলহাজ্ব ছফেদ আলী খানের ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, ১২ নভেম্বর ২০০৯ সালে ৯০৩৮ নং রেজিঃ কোবলা দলিলে ০.৩৩ একর, ০৯ ডিসেম্বর ৯৮৬৬ নং রেজিঃ কোবলা দলিলে ০.০৮ একর ও ১৩ জানুয়ারী ২০১০ সালে ৪৭২ নং কোবলা দলিলে ০.১০ একর সর্বমোট ০.৫১ একর জমি ক্রয় করে ভেগদখল করা শুরু করি। আমি বসবাসের জন্য ওই জমিতে মাটি ভরাট করে ১টি পাকা ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম নির্মাণ করি।

এছাড়া একটি ১টি টিউবওয়েল ও একটি সেচ মটর স্থাপন করে ওই জমির চারিদিকে বেড়া দিয়ে আমগাছ ও মেহগনি গাছ রোপন করি। কিন্তু গত ০১ মে বকচরা গ্রামের মৃত আনোয়ার উদ্দিন খানের ছেলে ইদ্রিস আলী খান(৫৫), মৃত জনাব আলী খাঁর ছেলে বজলুর রহমান খান(৬৫) মৃত গোলাপ রহমান খানের ছেলে জুলফিকার আলী ভূট্টো(৪৫) ও সুলতান পুর গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে সামছুজ্জামান জুয়েল(৪২) ওই জমিতে ১টি সাইনবোর্ড স্থাপন করে দাঁ, কুড়াল, শাবল, বাশের লাঠি, কোদাল, ঝুড়ি, বালি, খোয়া, সিমেন্টের মাটি, পিলার বাঁশ এনে আমার জমিতে প্রবেশের চেষ্টা করে।

এ সময় আমি বাধা দিলে তারা আমাকে মারতে উদ্যত হয়। পরে আমার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে তারা যে কোনভাবে জমি দখল করে নেবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে গত ৬ মে আমি এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা করি। মামলার নোটিশ ও থানা পুলিশের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌছায়। এ ব্যাপারে আমি সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করি। কিন্তু আজ শুক্রবার দুপুরে আমরা জুম্মার নামাজের জন্য ব্যস্ত থাকার সুযোগে অভিযুক্তরা ওই জমিতে থাকা পাকা ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম ভাংচুর করে।

এমনকি ওই ঘরের বৈদ্যুতিক মিটারও ভাংচুর করে, তার ছিড়ে মিটার সরিয়ে বৈদ্যুতিক খুটির পাশে রেখে দেয়। যে কারনে যে কোন মুহূর্তে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভাংচুরের ঘটনা শোনার সাথে সাথে সাতক্ষীরা থানার এএস আই হাসানুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং জুলফিকার আলী ভূট্টো ও শামছুজ্জামান জুয়েল(৪২)কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইদ্রিস আলী খান বলেন, ওই জমি আমাদের। আমরা যে জমি রহমানের কাছে বিক্রি করেছি সে জমির দাগ নং আলাদা। এতদিন ধরে সে আমাদের জমি জোরপূর্বক ভোগদখল করে খাচ্ছিল। তাই আজ আমরা আমাদের জমি দখলে নিয়েছি।

সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হাসানুর রহমান, ঘটনাস্থলে যেয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুরের সত্যতা পাওয়ায় আমরা দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি। দুইপক্ষকে ডেকে দলিলাদি নিয়ে বৃহস্পতিবার থানায় আসতে বলা হয়েছে। এবং যাদেরকে থানায় আনা হয়েছিল তাদেরকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই জমিতে না যাওয়ার জন্যেও বলা হয়েছে।

দৈনিক সাতক্ষীরা/জেডএইচ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)