সাতক্ষীরায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা !

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে তৃতীয় শ্রেনির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে পাষান্ড এক দর্জী। ওই দর্জির নাম আব্দুল গফফার খোকন (৫৫)। সাতক্ষীরা সদর থানার ঠিক পূর্বপাশে তার দর্জির দোকান রয়েছে। ওই দোকানের ভিতরেই শিশুটিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পরে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই এলাকা ফাঁকা ছিল। ওই দোকানের পাশের একটি স্কুলে মেয়েটি পড়ালেখা করে।

স্থানীয়রা জানায়, গতকাল স্কুল ছুটির পর বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে শিশুটিকে কৌশলে আব্দুল গফ্ফার ওরফে খোকন দর্জি তার দোকানের ভিতর ডেকে নিয়ে যায়। চারিদিকে তেমন লোকজন না থাকার সুযোগে দোকানের সাটার টেনে দিয়ে শিশুটিকে দোকানের ভিতরে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে পাষান্ড খোকন দর্জি। শিশুটির আত্মচিৎকারে পাশ্ববর্তী লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরে কৌশলে খোকন দর্জি সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আরো জানায়, এ ঘটনার পর শিশুটির পিতা-মাতা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং তাৎক্ষানিক ভাবে শিশুটিকে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় যায়। কিন্তু তাদেরকে থানা থেকে অভিযোগপত্র লিখে আনতে বলে পুলিশের এক জনৈক সদস্য। শিশুটির দরিদ্র পিতা-মাতা থানার ওসি’র রুম পর্যন্ত সে সময় পৌছাতে পারেনি। তার আগেই জনৈক ওই পুলিশ সদস্য থানা থেকে তাকে কৌশলে পাঠিয়ে দেয়।

এরই মধ্যে সুচতুর খোকন দর্জি শিশুটির পিতা-মাতাকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। জানাগেছে ৪৫ হাজার টাকা লেনদেনও হয়েছে। স্থানীয় পৌর কমিশনার সৈয়দ মাহমুদ পাপার বাড়িতে শিশুটির পিতা-মাতা ভাড়া থাকে। তার পিতা একজন ভ্যানচালক। কমিশনার পাপা মিমাংসার বিষয়টি জানেন বলে স্থানীয়রা আরো জানান।

স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা মিমাংসার এই ঘটনায় জড়িত এবং দর্জি খোকনের কাছ থেকে তারাও মোটা অংকের ফায়দা লুটেছে বলে জানাগেছে।

লম্পট আব্দুল গফফার ওরফে খোকন দর্জির বাড়ি সাতক্ষীরা জেলা শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায় বলে জানাগেছে।

এ ব্যাপারে খোকন দর্জির সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি  জানান, জামার মাপ দিতে মেয়েটি তার দোকানে গিয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার তো সবই মিটেগেছে। এখন তো আর কোন অভিযোগ থাকার কথা নয়। কি ভাবে মিটালেন ? জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনটি কেটে দেন। দ্বিতীয় দফায় ফোন দিলেও তিনি আর মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

সাতক্ষীরা পৌর কমিশনার সৈয়দ মাহমুদ পাপা  জানান, গতকাল (মঙ্গলবার ) বিষয়টি আমি শুনেছিলাম। আমার বাড়িতেই মেয়েটির পিতা-মাতা ভাড়া থাকে। ‘মেয়ে’ বিধায় এনিয়ে তার পিতা-মাতা আর অগ্রসর হতে মনেহয় চাচ্ছে না। পরে শুনেছি তারা বিষয়টি মিটিয়ে ফেলেছে। এর চেয়ে আমি আর কিছু জানিনা।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মারুফ আহমেদ  জানান, আমার থানার পাশে এতো বড় একটি ঘটনা ঘটলো, কিন্তু আমি জানতে পারলাম না। বিষয়টি এখুনি খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)